ভারি বৃষ্টি, ভূমিধ্বস ও আকস্মিক বন্যায় বিপর্যস্ত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো। আসাম, মণিপুর, ত্রিপুরা, সিকিম ও অরুণাচলের পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। গেল কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে পানিতে তলিয়েছে এসব রাজ্যের বেশিরভাগ জেলা।
রোববার আসামের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর শিলচরে ১৩২ বছরের রেকর্ড বৃষ্টিপাত হয়েছে। গেল ২৪ ঘণ্টায় ৪শ ১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় বাণিজ্যিক এই শহরটিতে। ১৮৯৩ সালের পর যা সর্বোচ্চ। বরাক নদীতীরে অবস্থিত এই শহরটি ২০২২ সালেও ভয়াবহ বন্যার শিকার হয়। যেখানে শহরটির ৯০ শতাংশই পানির নিচে ডুবে যায়।
এছাড়াও বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে আসামের প্রায় ১৯ জেলার সাড়ে ৭শ' গ্রাম। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ লাখেরবো বেশি মানুষ। ডিব্রুগড়, নিমাতিঘাটসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ব্রক্ষ্মপুত্র নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে।
বন্যার পানিতে ভাসছে আরেক রাজ্য মণিপুরও। আটকা পড়েছেন প্রায় ২০ হাজার মানুষ। সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন্যার পানিতে। যেখানে ত্রিশের অধিক আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বন্যা কবলিত বাসিন্দাদের সেখানে আশ্রয় নেয়ার আহবান জানিয়েছে স্থানীয় সরকার।
গেল ৪ দিনে প্রায় অর্ধশত ভূমিধ্বসের ঘটনা ঘটেছে রাজ্যটিতে। খুরাই, হেইঙ্গাং এবং চেকন এলাকায় নদীর পানি বাড়ায় বাঁধ ভেঙ্গে যায়। এতে প্লাবিত হয় রাজ্যের ইমফল জেলার বেশ কয়েকটি এলাকা ও পূর্বাঞ্চলের অনেক জেলা।
মৌসুমি বৃষ্টিতে অরুণাচল রাজ্যের পরিস্থিতিও নাজুক। এবছর রাজ্যটিতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মৌসুমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানান ভারতের কেন্দ্রীয় সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজ্জু। তাই রাজ্যের সব বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার পরামর্শ তার। ভূমিধ্বসে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ৪ লাখ টাকা করে অনুদানের ঘোষণা দিয়েছে রাজ্য সরকার।
এদিকে, ভারি বৃষ্টিতে তৈরি বন্যায় উত্তর সিকিমে আটকা পড়েছে প্রায় ১২শ' পর্যটক। অতিরিক্ত ভূমিধ্বসের কারণে তাদের উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে বলেও জানায় দমকল বাহিনী।
এছাড়াও, আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মেঘালয়ের ১০ জেলা। আর ত্রিপুরায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ।