৩১ আগস্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক মোদির

নরেন্দ্র মোদি, শি জিনপিং
এশিয়া
বিদেশে এখন
0

ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যকার যুদ্ধ উস্কে দিচ্ছে ভারত। মোদিকে ট্রাম্পের ভয়ঙ্কর ব্যক্তি সম্বোধনের একদিনের মাথায় এমনটাই দাবি করেছেন হোয়াইট হাউজের বাণিজ্য উপদেষ্টা। রাশিয়ার জ্বালানি তেল কেনা বন্ধে চাপ প্রয়োগ করা হলেও মুনাফার স্বার্থে ভারত এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে না, বলছেন বিশ্লেষকরা। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ৩১ আগস্ট তিয়ানজিনে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি।

চলতি বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি দীর্ঘদিনের বন্ধু আখ্যা দিয়ে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সম্মানিত বোধ করছেন বলে উল্লেখ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সাড়ে ছয় মাস পর হোয়াইট হাউজে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে এভাবেই ভয়ঙ্কর ব্যক্তি বলে সম্বোধন করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। জানান, পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত নিরসনে ভারতকে শুল্কারোপের হুমকি দেন তিনি। পাঁচ ঘণ্টার মধ্যেই যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি দেন নয়াদিল্লি।

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সম্পর্কে শীতলতার পেছনে রয়েছে নয়াদিল্লি-মস্কোর তেল বাণিজ্য। হোয়াইট হাউজের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারোর দাবি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ উসকে দিচ্ছে ভারত। পুতিন কিংবা জেলেনস্কি নয়, এ যুদ্ধ মোদির। কারণ যুদ্ধের কারণে রাশিয়া থেকে তেল কিনে পরিশোধিত তেল বিক্রি করে সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে নয়াদিল্লি।

হোয়াইট হাউজের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সবাই ভারতের জন্য ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। ভোক্তা থেকে ব্যবসায়ী এমনকি শ্রমিক সবাই ভারতের উচ্চ শুল্ক হারের শিকার। আবার করদাতারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কারণ মোদির যুদ্ধকে আমরা তহবিল দিচ্ছি। ইউক্রেনে শান্তির পথ নয়াদিল্লি হয়ে যেতে হবে।’

আরও পড়ুন:

রাশিয়ার তেল কেনার শাস্তিস্বরূপ এরইমধ্যে ভারতের ওপর শুল্কহার দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ কার্যকর করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যা ১০০ শতাংশে উন্নীত করার আহ্বান জানাচ্ছেন কট্টর মার্কিন আইন প্রণেতারা। এত হুমকি সত্ত্বেও মুনাফার স্বার্থে মস্কোর ওপর নির্ভরতা কাটাচ্ছে না নয়াদিল্লি।

রয়টার্সের তথ্য বলছে, বছরের প্রথম সাত মাসে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৮ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল কিনেছে ভারত। যুদ্ধ শুরুর পর প্রতি ব্যারেল তেলে ২০ থেকে ২৫ ডলার ছাড় দিলেও এখন এ হার আড়াই ডলারে নামিয়ে এনেছে রাশিয়া। যদিও ছাড়ের এ অর্থ এখনও অনেক বেশি। ভারতের মোট জ্বালানি তেল আমদানির ৩৬ শতাংশ নির্ভর করে রাশিয়ার ওপর। আর ভারতীয়দের চাহিদা মিটিয়ে পরিশোধিত তেল বেশি দামে রপ্তানি করা হয় পশ্চিমা দেশগুলোয়।

জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ধর বলেন, ‘আমার মনে হয় না ভারত রাশিয়ার জ্বালানি তেলের নির্ভরতা কাটাতে পারবে। কারণ তারা ছাড়কৃত মূল্যে তেল পাচ্ছে। এটি এখন যৌক্তিকও হবে না। কারণ এতে ভারতের অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়বে। রপ্তানিতেও ধাক্কা লাগবে।’

সম্পর্কের মেরুকরণের মধ্যেই এসসিও সম্মেলনে অংশ নিতে চীন সফরে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। আগামী ৩১ আগস্ট তিয়ানজিনে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নিবেন নরেন্দ্র মোদি। সাত বছর পর ভারত-চীন সম্পর্কের উষ্ণতার প্রতিক্রিয়া কীভাবে দেখাবে যুক্তরাষ্ট্র, এখন সেটিই দেখার বিষয়।

এসএস