১৯৮১ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত ইরানের তৃতীয় প্রেসিডেন্ট এবং তারপর থেকে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা, ৪৪ বছর ধরে দেশের নেতৃত্বভার আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির কাঁধে। বার্ধক্যের ভারে ন্যুব্জ হলেও লৌহমানবের মতোই দায়িত্ব পালনে অটল ৮৬ বছর বয়সী এ নেতা।
একের পর এক চোরাগোপ্তা হামলায় ইরানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের হত্যার ধারাবাহিকতায় ইসরাইলি নীলনকশার কেন্দ্রে যে খামেনিও আছেন, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু এখনও বেঁচে আছেন তিনি।
ইরান-ইসরাইল সংঘাত নজিরবিহীন রূপ নিতে থাকার মধ্যেই বার্তা সংস্থা রয়টার্সের রোববারের প্রতিবেদনে উঠে আসে, কয়েকদিন ধরে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মনেতাকেও হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়েছে ইসরাইল। কিন্তু ঘনিষ্ঠতম মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাধায় এখন পর্যন্ত থমকে আছে সে পরিকল্পনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই মার্কিন কর্মকর্তার বরাতে রয়টার্স জানায়, খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনায় ভেটো দিয়েছেন ট্রাম্প। প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা জানান, কোনো মার্কিন নাগরিককে ইরান হত্যা করেনি এবং যতক্ষণ পর্যন্ত এমন কিছু না ঘটছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ইরানের রাজনৈতিক নেতৃত্বে আঘাত হানার বিষয়ে কথাই বলতে চায় না যুক্তরাষ্ট্র।
জানা যায়, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধে দেশটিতে ইসরাইল বড় পরিসরে হামলা শুরু করার পর থেকেই ইসরাইলি কর্মকর্তাদের সাথে অব্যাহত যোগাযোগ রেখে চলেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। এর মধ্যেই তারা জানতে পারেন যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে হত্যার সুযোগ পেয়েছে ইসরাইলি গোয়েন্দারা। কিন্তু তৎক্ষণাৎ সে পরিকল্পনা বাতিল করে দেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প নিজেই ইসরাইলকে এ বার্তা দিয়েছেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সাথে যে নিয়মিত আলাপ চলছে ট্রাম্পের, সেটি নিশ্চিত করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। এ খবর প্রকাশের পরপরই ফক্স নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু জানান, ইরানের শাসকগোষ্ঠীর শীর্ষ পর্যায়ে পরিবর্তন অসম্ভব নয়।
ইসরাইলি আগ্রাসনের মুখে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির বিষয়ে থমকে যাওয়া ওয়াশিংটন-তেহরান আলোচনা নতুন করে শুরু করার বিষয়ে আশাবাদী মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
গত শুক্রবার (১৩ জুন) থেকে ইরানজুড়ে বিভিন্ন পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র, সামরিক স্থাপনা ও আবাসিক ভবনে ইসরাইলি হামলায় প্রাণ যায় ছয় পরমাণু বিজ্ঞানী এবং শীর্ষ চার সামরিক কর্মকর্তাসহ শতাধিক মানুষের। এক বছর আগেই চোরাগোপ্তা হামলায় হেলিকপ্টার ভূপাতিত করে ইরানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকেও হত্যা করে ইসরাইল।