ইউক্রেনের সুমিতে এবার রুশ সেনাদের অগ্রগতি ঠেকিয়ে দেয়ার দাবি করলো ইউক্রেন। অন্যদিকে দোনেৎস্কে আরও একটি বসতির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রাশিয়া।
সংঘাতের সাড়ে তিন বছরেও নেই যুদ্ধ বন্ধের কোনো লক্ষণ। উল্টো এর তীব্রতা আরও বাড়ার মধ্যেই তুরস্কের মধ্যস্থতায় ফের বন্দিবিনিময় করলো দুই দেশ। সঠিক সংখ্যাটি জানা না গেলেও, চলতি মাসের শুরুতে মুখোমুখি বৈঠকে কমপক্ষে এক হাজার সেনা বিনিময়ে সম্মত হয়েছিল রাশিয়া ও ইউক্রেন।
বাকি সব বিষয়ে দেশ দুটি নিজ নিজ অবস্থানে অনড় থাকায় যুদ্ধ বন্ধে ভবিষ্যৎ আলোচনার পথ থমকে গেছে। এমন পরিস্থিতিতেই দুই দেশকে অস্ত্র সরবরাহ ইস্যুতে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছে অন্যান্য দেশ। ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ করলে হুমকিতে পড়বে ইউরোপ, চীনের সাংহাই সহযোগিতামূলক জোটের বৈঠকে এমন প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে রেখেছে রাশিয়ার। অন্যদিকে, দুএক মাসের মধ্যেই যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে আরও সেনা পাঠাতে পারে উত্তর কোরিয়া, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দাবি দক্ষিণ কোরিয়ার।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলৌসোভ বলেন, ‘ইউক্রেনের পরাজয় যে অবধারিত, সেটি বুঝেই কিয়েভ সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে বাজি ধরে। ইউক্রেনকে অস্ত্র আর ভাড়াটে সেনা সরবরাহ করে সামরিক পদক্ষেপ দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এতে ইউরোপেই অস্থিতিশীলতার হুমকি বাড়ছে।’
দক্ষিণ কোরিয়ার সংসদীয় গোয়েন্দা কমিটির সদস্য লি সিয়ঙ-কিউন বলেন, ‘উত্তর কোরিয়া সম্প্রতি সেনা মোতায়েনে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এর ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে যে আগস্টে সেনা মোতায়েন হতে পারে। উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে গোলাবারুদ-ক্ষেপণাস্ত্র, ইলেকট্রনিক জ্যামিং সরঞ্জাম দিচ্ছে। বিনিময়ে রাশিয়া স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ আর ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার বিষয়ে প্রযুক্তিগত পরামর্শ দিচ্ছে পিয়ংইয়ংকে।’
অন্যদিকে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে কোনো পক্ষকেই অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ সত্য নয় বলে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট- ন্যাটোর কড়া সমালোচনা করেছে চীন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন বলেন, ‘ইউক্রেন ইস্যুতে চীন সবসময় আলোচনার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠায় জোর দিয়েছে, সংকটের রাজনৈতিক সমাধানে সচেষ্ট রয়েছে এবং যুদ্ধে জড়িত কোনো পক্ষকে কখনও অস্ত্র সরবরাহ করেনি। আন্তর্জাতিক অঞ্চলে উত্তেজনা অতিরঞ্জিত করে এবং চীনের স্বাভাবিক সামরিক শক্তি বৃদ্ধির বিষয়ে অপপ্রচার চালিয়ে ন্যাটো নিজেদের সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে।’
এর আগে ইউক্রেনে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল নির্মাণে ফ্রান্সের স্ট্র্যাটসবার্গে কাউন্সিল অব ইউরোপের সাথে চুক্তি করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহযোগিতাও চান তিনি।