আরব ঐতিহ্যে জায়গা করে নিলো ইয়েমেনের ‘তাবিলা ট্যাঙ্ক’

ইয়েমেনের ‘তাবিলা ট্যাঙ্ক’
মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

আরব ঐতিহ্যের তালিকায় জায়গা করে নিলো ইয়েমেনের প্রাচীন জলধারা ‘তাবিলা ট্যাঙ্ক’। শামসান পর্বতে খোদাই করা প্রাচীন জলাধারটি মূল কাজ ছিল বৃষ্টির পানি সংরক্ষণসহ এডেন শহরকে বন্যা থেকে রক্ষা এবং পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা। যা ইয়েমেনের প্রাচীন সংস্কৃতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

ইয়েমেনের এডেন শহরে শামসান পর্বতের পাদদেশে অবস্থিত তাবিলা ট্যাঙ্ক বা সিস্টারনস অব তাবিলা। ঐতিহাসিক জলাধারটি বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও বন্যা প্রতিরোধে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, পানির সংকট দূর করতে ১১৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ইয়েমেনে গড়ে তোলা হয় এ প্রাচীনতম নিদর্শনটি।

সপ্তম শতাব্দীতে ইয়েমেনে ইসলামের আগমনের পর কিছু পাণ্ডুলিপিতে ট্যাংকগুলোর কথা উল্লেখ আছে। আগ্নেয়গিরির পাথর কেটে তৈরি করা এ ট্যাঙ্ক। যেখানে ব্যবহার করা হয় আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের তৈরি বিশেষ ধরনের সিমেন্ট। যা ট্যাঙ্কের দেয়ালকে দীর্ঘ সময় পানি ধরে রাখতে সহায়তা করে।

পর্বত বাঁকে খোদাই করা প্রাচীন এ জলাধারটি এবার ঠাঁই পেলো আরব লীগ শিক্ষা, সাংস্কৃতিক ও বৈজ্ঞানিক সংস্থার ঐতিহ্যের তালিকায়। তিউনিস-ভিত্তিক আরব লীগের এ প্রতিষ্ঠানটি আরব বিশ্বের স্থাপত্য ও নগর ঐতিহ্যের তালিকা প্রকাশ করে। যা ইয়েমেনের প্রাচীনতম সাংস্কৃতিক নিদর্শনগুলোর জন্য একটি বড় মাইলফলক।

এডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক প্রত্নতত্ত্ব ও সভ্যতা বিভাগের অধ্যাপক হাইফা ম্যাকাওয়ি বলেন, ‘তাবিলা জলাধারটি এডেন শহরসহ ইয়েমেনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। এটি আরব ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলোর একটিতে স্থান করে নিয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ব্যাপারে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল।’

আরও পড়ুন:

ঐতিহাসিক এ নিদর্শনটি প্রতি বছরই আকৃষ্ট করে বহু দর্শনার্থী ও গবেষকদের। ইয়েমেনের অতীত ঐতিহ্যের বিস্ময়কর নির্মাণ দেখে অভিভূত আগত পর্যটকরা।

পর্যটকদের মধ্যে একজন বলেন, ‘এ অসাধারণ নির্মাণ সত্যিই বিস্ময়কর। আধুনিক যুগে আমাদের পক্ষে এ ধরনের শক্তিশালী জলাধার নির্মাণ করা সম্ভব নয়।’

ইয়েমেনে এ ধরনের প্রায় অর্ধশত ট্যাঙ্ক রয়েছে। যেগুলোর মোট পানি ধারণক্ষমতা ছিল আড়াই কোটি গ্যালনের বেশি। যা শহরের বাসিন্দা ও যাত্রীবাহী জাহাজগুলোর চাহিদা পূরণ করত। তবে বর্তমানে মাত্র ১৮টি ট্যাঙ্ক সক্রিয় আছে।

অধ্যাপক হাইফা ম্যাকাওয়ি বলেন, ‘ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে এডেন শহর দখলের পর তা খুলে দেয়া হয়েছিল। শহরের পানির চাহিদা মেটাতে ব্যবহার করা হতো এ ট্যাঙ্ক। এগুলোর মধ্যে একটিতে সর্বোচ্চ সাড়ে চার লাখ গ্যালন পানি ধারণ ক্ষমতা ছিল।’

প্রাচীন জলাধারটি এখন পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে আছে। গেল প্রায় ১৫ বছর ধরে শুকনো অবস্থায় পড়ে আছে ট্যাঙ্কটি। শহরের পানির চাহিদা পূরণ না করলেও, বন্যা মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে তাবিলা ট্যাঙ্ক।

এসএস