বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য পরিষদ কর্তৃক গৃহীত সংশোধনীগুলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে অস্বাভাবিকভাবে অতিরিক্ত ক্ষমতা প্রদান করে, বিশেষ করে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য সংকট মোকাবেলায়। এসব পরিবর্তনের মাধ্যমে সংস্থাটি মহামারির ঘোষণা দেয়ার ক্ষেত্রে এবং স্বাস্থ্য সামগ্রী ‘সমানভাবে বিতরণের’ নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, এই সংশোধনীগুলোর ভাষা অস্পষ্ট এবং ব্যাপক, যা দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপের পরিবর্তে রাজনৈতিক বিষয় যেমন ‘ঐক্য’ বা ‘ভ্রাতৃত্ব’-এর মতো বিষয়কে প্রাধান্য দেবে।
এছাড়া এতে বলা হয়েছে দেশগুলোকে এমন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে, যা জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য প্রচার ও নিয়ন্ত্রণের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং বৈজ্ঞানিক মতবিনিময় রুদ্ধ করতে পারে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সংশোধনীগুলোর মাধ্যমে সব দেশকে ডিজিটাল স্বাস্থ্য সনদ চালুর আহ্বান জানানো হয়েছে, যা গোপনীয়তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য হুমকি হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, ‘আমরা প্রতিটি সিদ্ধান্তে আমাদের নাগরিকদের অগ্রাধিকার দেবো এবং এমন কোনো আন্তর্জাতিক নীতিমালা মেনে নেব না, যা যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের বাক স্বাধীনতা, গোপনীয়তা বা ব্যক্তি স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সংশোধনীগুলোর মাধ্যমে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি নির্ধারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অযাচিত হস্তক্ষেপের ঝুঁকি রয়েছে। এছাড়া উল্লেখ করা হয়, অতীতে চীনের রাজনৈতিক প্রভাব এবং সেন্সরশিপের কারণে সংস্থাটির নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, বিশেষ করে মহামারির সময়।
যদিও যুক্তরাষ্ট্র এরইমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করেছে, তবুও এই সংশোধনীগুলো বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা ছিল। এ কারণেই আগেভাগেই তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
রুবিও ও কেনেডি তাদের বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের জনস্বাস্থ্য নীতিমালা নির্ধারিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের ইচ্ছা ও মূল্যবোধ অনুযায়ী, কোনো অনির্বাচিত বৈশ্বিক সংস্থার নির্দেশে নয়।’
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত বৈশ্বিক স্বাস্থ্য প্রশাসনের ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে, বিশেষ করে কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ের আলোকে যেসব নতুন বৈশ্বিক স্বাস্থ্য কাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তারা বৈশ্বিক স্বাস্থ্য উদ্যোগে অংশগ্রহণ চালিয়ে যাবে। তবে তা হবে নিজেদের শর্ত ও জনগণের অধিকারকে অগ্রাধিকার দিয়ে।