যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের এলমেনডর্ফ–রিচার্ডসন সামরিক ঘাঁটি। লাল গালিচায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০১৯ সালের পর এই প্রথম শুক্রবার মুখোমুখি দুই রাষ্ট্রপ্রধান।
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প-পুতিনের এই বৈঠক নিয়ে গোটা বিশ্বের আগ্রহ ছিল তুঙ্গে। স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টায় শুরু হয় ট্রাম্প–পুতিন দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলে আলোচনা। বৈঠকে ট্রাম্পের সঙ্গে অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। অপরপক্ষে রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ও পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ। যদিও ইউক্রেনে সংঘাত বন্ধে কোনো সমাধান সূত্র ছাড়াই শেষ হয়েছে পারসুয়িং পিস শীর্ষক এ সামিট।
চুক্তি না হলেও বৈঠক শেষে খোস মেজাজেই সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। সমাধানে না পৌঁছাতে না পারলেও পুতিনের সঙ্গে এ বৈঠক অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আশ্বাস দিয়েছেন, পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো ও ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সংঘাত বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে। যৌথ সংবাদ সম্মেলন শেষে পুতিনকে ধন্যবাদ দেন ট্রাম্প এবং তাকে ‘ভ্লাদিমির’ বলে সম্বোধন করেন তিনি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। অনেক বিষয়েই আমরা একমত হয়েছি। কিছু জটিল বিষয়ের সমাধান আসেনি তবে আলোচনায় অগ্রগতি এসেছে। চুক্তি স্বাক্ষরের আগ পর্যন্ত বলা যায় না আমরা সমঝোতায় পৌঁছেছি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট, সামরিক জোট ন্যাটো ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের এ বিষয়ে জানাবো।’
বিপরীতে রুশ প্রেসিডেন্ট মন্তব্য করেন, একটি স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য ইউক্রেনের সঙ্গে শুরু হওয়া সংঘাতের মূল কারণগুলো নিরসন করতে হবে। পাশাপাশি ইউক্রেন ও তার ইউরোপের মিত্রদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, শান্তি প্রক্রিয়ায় বাধা দিলে বা উস্কানিমূলক কাজ করলে সংকট সমাধান সম্ভব না।
ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধা বজায় রেখে একটি গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। আপনারা জানেন আমাদের আলোচনার কেন্দ্রে ছিল ইউক্রেন পরিস্থিতি। ইউক্রেনে সংঘাত বন্ধ করা ও যুদ্ধ শুরুর কারণ অনুসন্ধানে মার্কিন প্রশাসন ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্যোগ ও আকাঙ্ক্ষা প্রশংসনীয়। আমি একাধিকবার বলেছি, ইউক্রেনে যা ঘটেছে তার সঙ্গে রাশিয়ার নিরাপত্তা সরাসরি জড়িত আছে।’
সংবাদ সম্মেলন শেষে করমর্দন করে হাসিমুখে একে অপরকে বিদায় জানিয়েছেন ট্রাম্প-পুতিন। বৈঠক থেকে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি বা এ যুদ্ধ বন্ধের চুক্তি নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা না আসলেও শিগগির আবার দেখা করতে পারেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। ট্রাম্পকে মস্কোতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন থেকে বিদায় নেন পুতিন।