জামায়াত নেতা আজহারুলের রিভিউ আবেদনের পরবর্তী শুনানি বৃহস্পতিবার

আইন ও আদালত
0

মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে জামায়াতের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের রিভিউ আবেদনের পরবর্তী শুনানি আগামী (বৃহস্পতিবার, ৬ মে)। দীর্ঘ শুনানিতে তার পক্ষের আইনজীবী চারটি যুক্তিতে খালাস চেয়েছেন। ট্রাইব্যুনালের রায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বললেন শিশির মনির। জানালেন, রায়ের সবই ছিল সাজানো।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে এক হাজার ২৫৬ জন মুক্তিকামী জনতাকে গণহত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, শত শত ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের মতো ১৭ টি মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল।

ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন এটিএম আজহার। আপিল নিষ্পত্তি করে ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর আপিল বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে করা হয় রিভিউ আবেদন।

আজ (মঙ্গলবার, ৫ মে) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে এই শুনানি হয়। এটিএম আজহারুল ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির। তিনি চারটি আইনি যুক্তিতে জামায়াত নেতার শাস্তি থেকে খালাস চান। এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড আন্তর্জাতিক আইন মেনে হয়নি, রায়টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, মামলার প্রমাণ, সাক্ষ্য সবই ছিল দুর্বল ও সাজানো বলেও জানান তিনি।

শিশির মনির বলেন, ‘আমরা এ শুনানিতে মূলকথা যেটা বলেছি, প্রথম হলো আমরা বলেছি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে জামায়াতের নেতাদের আগে ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। তিনি এখনও বেঁচে আছেন। তার ফাঁসি কার্যকর করার জন্য যে রায় দেয়া হয়েছিল, এটিও ছিল রাজনৈতিক বিবেচনায় তাকে টার্গেট করা হয়েছিল।’

শিশির মনির যুক্তিতর্কে তুলে ধরেন জামায়াত কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয় সংক্ষিপ্ত রায়ের ভিত্তিতে। যা উপমহাদেশের বিচারিক ইতিহাসে ব্যতিক্রম ঘটনা। তাড়াহুড়ো করে এই জামায়াত নেতার ফাঁসি কার্যকরের অভিযোগ করেন তিনি।

শিশির মনির বলেন, ‘কাদের মোল্লাকে শর্ট অর্ডারের মাধ্যমে যেভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এই কার্যকর মৃত্যুদণ্ডের প্রসেস এই ভারতীয় উপমহাদেশের ৪০০ বছরের ইতিহাসে এ ধরনের কোনো ঘটনা কোনোদিন ঘটেনি। যেহেতু ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল, তাই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্যই তড়িঘড়ি করে শর্ট অর্ডার দিয়ে একটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এ সবকিছু নিয়েই প্রশ্ন উঠবেই। অতীতে যাদের ব্যাপারে এ ধরনের অবিচার করা হয়েছে, কী ফাইন্ডিং দিয়ে কার্যকর করা হয়েছে, সবকিছুর ব্যাপারেই আমরা আজকে সাবমিশন রেখেছি।’

জামায়াতের শীর্ষ নেতা এটিএম আজহারের শুনানিতে আদালতে উপস্থিত ছিলেন সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, ঢাকা দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুলসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

এসএস