অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণে অসহায় বিআরটিএ?

চট্টগ্রাম
রিকশার লাইসেন্স না থাকায় মামলা মামলা দিচ্ছে পুলিশ
এখন জনপদে
দেশে এখন
0

জব্দের পর জরিমানা দিয়ে আবারো সড়কে নামছে অটোরিকশা। এই সুযোগ এবং শোরুমে দেদারসে বিক্রিতে বাধা না থাকার সুযোগ নিচ্ছে মালিক-চালকরা। চট্টগ্রাম নগরে প্রতি মাসে অন্তত হাজারখানেক ব্যাটারিচালিত রিকশা বিক্রি হয়। রেজিস্ট্রেশন নম্বর না থাকায় এসব যানের বিরুদ্ধে অসহায় অবস্থানে বিআরটিএ।

দেখে মনে হবে যেন রিকশা হাট। যেখানে খোলা মাঠে ধরা পড়ছে তিন হাজারের বেশি ব্যাটারি চালিত যান। নগরের মনসুরাবাদে পুলিশের ডাম্পিং সাইটের সাম্প্রতিক এই চিত্র সামাজিক যোগাযোগ ও গণমাধ্যমে বেশ তোলপাড় ফেলেছে।

সম্প্রতি পুলিশকেও বেশ হার্ডলাইনে যেতে দেখা গেছে। গাড়ি জব্দের পাশাপাশি চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চলছে নিয়মিত অভিযান।

সার্জেন্ট ইব্রাহীম বলেন, 'সন্ধ্যার পর বা দিনের আলোতে কখনোই এই ব্যাটারি চালিত রিকশা সড়ক বা মহাসড়কে চলতে পারবে না। এটা আমাদের কমিশনার স্যারের স্পষ্ট নির্দেশনা। আশা করি আমরা অচিরেই ব্যাটারিচালিত অবৈধ যান সড়ক মহাসড়ক থেকে নির্মূল করতে আমরা সক্ষম হবো।'

তবে শেষমেশ জব্দ হওয়া এসব গাড়ির ভাগ্যে কী ঘটছে? চালকরা বলছে এসব যান মামলা খাওয়ার ১০ থেকে ২০ দিন পর তিন থেকে চার হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে ছাড়িয়ে আনা যায়। আবারও সড়কে নামার সুযোগ মেলেু। তবে পুলিশ বলছে, বারবার মামলা আর জরিমানার চাপে পড়ে বাধ্য হয়ে বন্ধ হবে এসব অবৈধ যান, বলছে পুলিশ।

নানা দুর্ঘটনা আর ঝুঁকির পরও হয়তো কম খরচে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার দ্রুতগামী যান হওয়ায়, শত দ্বিধার পরও এমন যানকে বারবার গ্রহণ করে নগরবাসী। প্রশ্ন হচ্ছে বড় দুর্ঘটনা বা সমালোচনার পর এসব যানের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে জনগণ বা প্রশাসন বেশ সক্রিয় হলেও স্থায়ী কোনো সমাধান কেন মিলছে না? সড়কে এসব বন্ধে প্রশাসন বা উর্ধ্বতনদের হুংকার বা তৎপরতা দেখা গেলেও শেষমেশ এসব যান যেমন আবার সড়কে উপর শিথিলতা আছে তেমনি এসবের শো রুম বা উৎসস্থল বন্ধে কেন নেয়া হচ্ছে না কোন পদক্ষেপ বা বিধিনিষেধ?

আরো পড়ুন:

ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের মধ্যে একজন বলেন, 'এই কারখানাগুলোতে অভিযান চালিয়ে উৎপাদন বন্ধ করেন। তখন আমি কিনতেও পারবো না, চালাতেও পারবো না, বিক্রি করতেও পারবো না।'

একদিকে অভিযান আবার অন্যদিকেু নগরের হালিশহর বা আগ্রাবাদে এসবের শো রুমে বন্ধ নেই বেচাকেনা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চীন থেকে আমদানি করা যন্ত্রাংশ দিয়ে এখানেই বানানো হয় ব্যাটারি রিকশা। নগরে প্রতি মাসে অন্তত হাজারখানেক রিকশা বিক্রি হয় বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

রেজিস্ট্রেশন নম্বর না থাকায় এসব যানের বিরুদ্ধে অসহায় অবস্থানে বিআরটিএ। তারা বলছে, কেবল অভিযান নয় অবৈধ এ রিকশাগুলো ধ্বংস করা না গেলে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে উদ্যোগ নিতে পারে সিটি করপোরেশন।

সবমিলিয়ে দিনে কোটি টাকার অর্থনীতির চাকা ঘোরে এইসব ব্যাটারিচালিত রিকশা মাধ্যমে। সাথে আছে সড়কে চলাচল নিয়ে নানা চাঁদাবাজি ও গ্যারেজগুলোর বৈধ অবৈধ বিদ্যুৎ চার্জ বাণিজ্য। প্রভাবশালীর সম্পৃক্ততা আর জীবিকার তাগিদে এসব নিয়ে পিছপা হতে রাজি নন চালক-মালিকরা।

ট্রাফিক বিভাগের তথ্য মতে, নগরে ৫০ থেকে ৬০ হাজার অটোরিকশা চলাচল করছে।

এসএস