গজারিয়া থানার ওসি আনোয়ার আলম আজাদ জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সেনাবাহিনীর বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা মর্টারশেল বিস্ফোরণ ঘটানোর মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করার সময় সেটি ২০০ মিটার এলাকা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এতে মর্টার শেলের স্লিপ্টারে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দোকানপাট-ঘরবাড়ি ও পশু।
এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখে স্থানীয়রা। পরে তাদের উদ্ধার করে পুলিশ।
সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, বিস্ফোরণে ঘরে থাকা টিভি ফ্রিজসহ ঘরের চাল উড়ে গেছে অনেকের। ঘটনাস্থলে ইউএনওসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রয়েছেন।
জানা যায়, মর্টারশেলটি নিষ্ক্রিয় করতে আজ বিকেল থেকে কাজ শুরু করে বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা। রাত ৭টা ৫৬ মিনিটে মর্টারশেলটি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়। তবে বিস্ফোরণের তীব্রতায় গ্রামটির অর্ধশত ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিস্ফোরণে সেলিম, হারেস, রশিদ, রফিজ, রেনু মিস্ত্রী, ফরিদ হোসেন, আব্দুল হান্নান, মানিক মিয়া, জলিল, মুক্তার হোসেন, আব্দুল গাফফার, সেলিম মিয়া, বারেকের বাড়িসহ গ্রামটির অর্ধশত বাড়িঘরের ক্ষয়ক্ষতি হয়। এসময় তীব্র শব্দে আশিক নামে এক চাষির তিনটি গরু মারা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী চা দোকানি আব্দুর রশিদ বলেন, 'বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মর্টার শেলটি নিষ্ক্রিয় করা হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটা বেশি ছিল প্রায় ৩০০ মিটার দূরের আমার দোকানের প্রায় সব কিছু উড়ে যায়।'
ঘটনাস্থলের চার কিলোমিটার দূরে বালুয়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা তানিয়া আক্তার বলেন, 'মঙ্গলবার সন্ধ্যা ঠিক ৭টা ৫৬ মিনিটে আমরা তীব্র ঝাঁকুনি অনুভব করি। প্রথমে বিষয়টিকে আমরা ভূমিকম্প ভাবলেও পড়ে জানতে পারি আড়ালিয়া গ্রামের উদ্ধার হওয়া মর্টার শেলটির বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।'
এদিকে এই ঘটনার পর স্থানীয়দের জনরোষে পড়ে পুলিশ ও গণমাধ্যম কর্মীরা। গণমাধ্যম কর্মীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে স্থানীয় কয়েকজন।
এর আগে গতকাল (সোমবার, ২৮ এপ্রিল) সকালে আড়ালিয়া গ্রামের মসজিদ সংলগ্ন হানিফের কৃষি জমিতে মাটি কেটে আইল বানাতে গিয়ে একটি মর্টার শেল উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়রা এটিকে প্রথমে সীমানা পিলার মনে করলেও পরবর্তীতে পুলিশ জানায় এটি একটি অবিস্ফোরিত মর্টারশেল। পরে আজ সেটি নিষ্ক্রিয় করার কার্যক্রম করে সেনাবাহিনীর বোম ডিজপোজাল ইউনিট।