অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন, ঢাকার বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মো. মহিউদ্দিন আরিফ, মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, মসজিদের ইমাম ও মন্দির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, খিলক্ষেত এলাকার বাসিন্দা এবং রেল ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বরাদ্দপ্রাপ্ত জমির মধ্যে খিলক্ষেত রেলওয়ে জামে মসজিদের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ০.২০১১ একর (৮,৭৬০ বর্গফুট), আন-নূর জামে মসজিদের জন্য ০.০৫৫২ একর (২,৪০৫ বর্গফুট) এবং খিলক্ষেত সার্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দিরের জন্য ০.০৫৬২ একর (২,৪৫০ বর্গফুট) জমি। বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত প্রতীকী মূল্যের বিনিময়ে এই জমিগুলো বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘গত বছর দুর্গাপূজার আগে আমাকে জানানো হয় যে রেলের জমিতে একটি মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। আমি বলেছিলাম, পূজা শেষে যেন মণ্ডপটি সরিয়ে ফেলা হয়। কিন্তু পরে রেলের প্রয়োজনে ওই জায়গাসহ অন্য অবৈধ স্থাপনাও সরিয়ে নেয়া হয়। আমি বলেছিলাম, প্রতিমা যেন সম্মানের সঙ্গে বিসর্জন দেয়া হয়। পরে ভিডিওতে দেখা যায়, প্রতিমা মাটিতে পড়ে আছে— এটি কষ্টদায়ক। আমি এর জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’

তিনি আরও জানান, মন্দিরের জমি বরাদ্দ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়েই মসজিদ সংক্রান্ত সমস্যার কথাও উঠে আসে। তাই একটি মন্দিরের পাশাপাশি দুটি মসজিদের জন্যও জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে এ বরাদ্দকে উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার রোল মডেল। ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো যারা অপবিত্র করে, তারা কোনো ধর্মের অনুসারী নয়—তারা অপরাধী।’
তিনি সকলের উদ্দেশে বলেন, ‘সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়—এমন যেকোনো কর্মকাণ্ড থামাতে হবে। প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:
ধর্ম উপদেষ্টা আরও জানান, যেসব দেবোত্তর সম্পত্তি আদালতে মামলাহীন, সেগুলো উদ্ধারে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে সর্বোচ্চ সহায়তা দেয়া হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার রেলওয়ের এই উদ্যোগকে ‘ব্যতিক্রমী এবং অনন্য নজির’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের শহিদ ও আহতরা যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছেন, আমরা সবাই মিলে তা বাস্তবায়ন করব।’
মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। আমি রেল বিভাগের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’
এ বরাদ্দ শুধু জমি নয়, বরং দেশের ধর্মীয় সম্প্রীতির শক্ত ভিত্তি এবং বৈচিত্র্যের সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশ বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।