৩০০ আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানা চূড়ান্ত: স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

এখন জনপদে
দেশে এখন
0

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করায় স্থানীয়দের মাঝে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ফরিদপুরে সীমানা পুননির্ধারণ করায় আড়াই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা। এছাড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের বিজয়নগর উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন থেকে হরষপুরকে সরিয়ে নেয়ায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। তবে গাজীপুর-৬ নামে একটি আসন বাড়ানোয় খুশি স্থানীয়রা।

প্রতিটি সংসদ নির্বাচনের আগে কমিশনের সবচেয়ে জটিল কর্মযজ্ঞ ৩০০ আসনের সীমানা পুন:নির্ধারণ করা। এক্ষেত্রে প্রশাসনিক অখণ্ডতা, ভৌগৌলিক অবস্থান, ভোটার সংখ্যার মতো বিষয়গুলোকে বিবেচনায় রাখতে হয় নির্বাচন কমিশনকে। সব বিষয় মাথায় রেখে নতুন করে মোট ৩৭টি আসনের সীমানা পরিবর্তন করে গতকাল (বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর) চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। যা ঘিরে স্থানীয়দের মাঝে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে ২ আসনে অন্তর্ভুক্ত করায় শুক্রবার সকাল থেক ফুঁসে উঠেছে স্থানীয়রা। ভাঙ্গার মনসুরাবাদ ও হামিরদী বাস স্ট্যান্ড এলাকায় সড়কে গাছ ফেলে অবরোধ করেন তারা। এসময় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন হাজারও মানুষ। বিক্ষোভকারীরা বলেন, ২০১৩ সালে ফরিদপুরের ৫টি আসন কেটে ৪টি করা হয়। এবারে নতুন করে সীমানা পুণনির্ধারণ মেনে নেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা। এতে আড়াই ঘণ্টা বন্ধ থাকে ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল। সড়কে তৈরি হয় চরম ভোগান্তি।

ফরিদপুরে স্থানীয়রা জানান, আমরা নগরকান্দায় যাব না। তাদের পূর্বপুরুষ এ এলাকা থেকে ভোট দিয়েছে, তারাও এখান থেকে ভোট দিতে চান বলে জানান।

আরও পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে বুধন্তি, চান্দুরা ও হরষপুর- এ তিনটি ইউনিয়নের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে ছিল বিপত্তি। বিভিন্ন সময় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা। তারপরেও চূড়ান্ত তালিকায় হরষপুরকে রাখা হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে। স্থানীয়রা বলছেন, কমিশনের সিদ্ধান্তে দুই ইউনিয়নের বাসিন্দারা প্রশাসনিক এবং অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ অবস্থায় কমিশনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে ওই দুই ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন তারা।

গাজীপুর-৬ নামে একটি নতুন আসনের জন্ম হয়েছে। যেখানে রাখা হয়েছে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৩২ থেকে ৩৯ এবং ৪৩ থেকে ৫৭ টি ওয়ার্ড ও কালিগঞ্জ উপজেলাকে। এতে খুশি সেখানকার ভোটার ও বাসিন্দারা। স্থানীয়রা বলছেন, বিপুল সংখ্যক জনসংখ্যা আর শিল্প-নগরীর বাস্তবতার সাথে মিলিয়ে সংসদীয় আসনের সংখ্যা বাড়ানোয় জনগণের প্রতিনিধিত্ব, উন্নয়ন ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণ আরও কার্যকর হবে।

আরও পড়ুন:

রাজনৈতিক বিশ্লেষক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, যেহেতু অনেকদিন পর নির্বাচন হচ্ছে সেহেতু কিছু পরিবর্তন লাগবেই। নির্বাচনী এলাকাগুলোতে যারা প্রার্থী হবেন তারা দেখবেন এলাকা ভেঙে সাজানোতে কোনো উদ্দেশ্য আছে কি না নির্বাচন কমিশনের। অথবা এতে এলাকার কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না। যদি নির্দিষ্ট এলাকার লোকজন মনে করেন এতে ম্যানিপুলেশন হয়েছে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে তখন তারা সেটা সামনে নিয়ে আসবে।

এদিকে, নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত তালিকায় বাগেরহাটের একটি আসন কমিয়ে তিনটি করা হয়েছে।

ইএ