নওগাঁর এক ফসলি জমিতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত

কৃষি , গ্রামীণ কৃষি
দেশে এখন
0

নওগাঁয় এক ফসলি জমিতে গত দুই-তিন বছর ধরে নানা জাতের ঘাস ও আগাছা জন্মেছে। এতে বাড়তি খরচের পাশাপাশি ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

বোরো আবাদের আগে জমি ঠিক করতে বিঘা প্রতি ৪ থেকে ৬ হাজার টাকা লাগছে। সবমিলিয়ে সদর ও রাণীনগর উপজেলার কৃষকদের এই খাতে বছরে কয়েক কোটি টাকা গুণতে হচ্ছে।

শীত আসায় জমিতে বর্ষাকালের জমে থাকা পানি অনেকটা শুকিয়ে গেছে। কিন্তু তারপরও মাটির দেখা পাওয়া যাচ্ছে না, কারণ জমিতে আগাছা জন্মেছে। রাণীনগরসহ সদরের প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমি এখন আগাছার দখলে। আর এই আগাছা পরিষ্কার করে জমি উদ্ধারে কৃষকদের বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে।

বড়খোল গ্রামের রুস্তম আলীর ৬ বিঘা আবাদি জমি, ফসল তোলার পর গত দুই বছর ঘাস ও আগাছার জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হতে বিঘাপ্রতি ৬ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে। আর বোরো আবাদ ও কাটা-মাড়াইয়ে বিঘাপ্রতি ১৮-১৯ হাজার টাকা খরচ পড়ে। একবার চাষযোগ্য জায়গাতে অযাচিত বাড়তি খরচ লোকসানের পাল্লা আরও ভারি করে তোলে।

চাষি রুস্তম আলী বলেন, ‘এক ফসলের জন্য ২৫ হাজার টাকা খরচ করে আমাদের লাভ হচ্ছে না।’

মাঠটি নিচু হওয়ায় আগে থেকেই কিছু সমস্যা ছিল। স্থানীয়দের দাবি, সেচ সুবিধা সম্প্রসারণ ও জলাবদ্ধতা দূর করতে খাল খননের পর বর্ষায় বিলে ঢেউ কমে কমে যায়। আর পানি স্থির থাকায় সহজেই কচুরিপানাসহ বিভিন্ন ধরনের ঘাস জন্মায়।

|undefined

নওগাঁর এক ফসলি জমি

এদিকে তুলে রাখা আগাছা জমির পাশে রাখায় জমির আয়তন কমছে। আর খনন করা খালের সুবিধাও পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ চাষিদের। এছাড়া খাল শুকিয়ে যাওয়ায় সেচের জন্য গভীর নলকূপের ওপর নির্ভর করতে হয়। এতে প্রতিবিঘায় খরচ পড়ছে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা।

রাণীনগর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা হক বলেন, ‘জমিতে পরিমাণ মতো ইউরিয়া ও এমওপি সার দেয়া হলে কচুরিপানা দ্রুত পচে যাবে। আর এই পচন থেকে জৈব সার তৈরি হবে। আর এটি যদি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয় তাহলে কৃষকরা উপকৃত হবে।’

ঘাস পরিষ্কারে প্রতি বছর জেলার কৃষকদের প্রায় ৪ কোটি টাকা বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে। সার দিয়ে ঘাস দমনের খরচের বোঝা কৃষকের ওপর না চাপিয়ে সমস্যা সমাধানে দ্রুত বিকল্প উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান ভুক্তভোগীদের।