রোডম্যাপে থাকবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি; পরিবেশ ধ্বংসকারী এজেন্ডা রাখবে না বিএনপি: মাহদী আমিন

ঢাবির সিনেট ভবনে তৃতীয় ম্যানিফেস্টো টক অনুষ্ঠান
রাজনীতি
0

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনী ইশতেহারে নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে গুরুত্বসহকারে স্থান দেবে। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে কীভাবে নবায়নযোগ্য খাতে যাওয়া যায়, তার একটি পরিকল্পিত রোডম্যাপও থাকবে। তবে উন্নয়নের নামে পরিবেশ ধ্বংস হয়—এমন কোনো এজেন্ডা বিএনপি ইশতেহারে রাখবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

গতকাল (শনিবার, ৩০ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সিনেট ভবনে আয়োজিত ‘ফসিল ফুয়েল টু রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যান্ড জাস্ট ট্রানজিশন’ শীর্ষক তৃতীয় ম্যানিফেস্টো টক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মাহদী আমিন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জ্বালানি খাত এখনও আমদানি নির্ভর। এ খাতকে ঘিরে আন্তর্জাতিক রাজনীতি রয়েছে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হুট করেই কমানো সম্ভব নয়। তবে নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে অগ্রাধিকার দিয়ে এগিয়ে যেতে বিএনপি অঙ্গীকারবদ্ধ। পাশাপাশি সবুজায়ন বাড়াতে বছরে ৫ কোটি গাছ লাগানোর পরিকল্পনাও হাতে নিয়েছে দলটি ‘

অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞরা বলেন, দেশে বর্তমানে তেল, গ্যাস আর কয়লা থেকে প্রায় ৯৭ ভাগ জ্বালানি উৎপাদন হয়। ফলে এ খাত থেকে কার্বন, মিথেন, সালফার, কপারসহ নানা ক্ষতিকর রাসায়নিক নির্গত হচ্ছে, যা পরিবেশ ধ্বংসের পাশাপাশি স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে। বক্তাদের মতে, জীবাশ্ম জ্বালানির ক্ষতিকর প্রভাব তাৎক্ষণিকভাবে ধরা না পড়লেও কৃষি, খাদ্য, মৎস্যসহ প্রতিটি খাতেই এর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।

নারী ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন মুর্শীদ বলেন, ‘জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার কমাতে হলে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। তরুণরাই পারে এ সংকট থেকে বিশ্বকে মুক্ত করতে। এজন্য তাদের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে সরকারের পরিকল্পনার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে।’

ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘তরুণদের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে হলে জীবাশ্ম জ্বালানি কমানো জরুরি।’ তিনি জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছাই পারে এই সংকট সমাধান করতে। তাই তার দল নির্বাচনী ইশতেহারে জীবাশ্ম জ্বালানি কমানোর সুপরিকল্পিত রোডম্যাপ রাখবে এবং নেট-জিরো লক্ষ্যে পৌঁছাতে কত সময় লাগবে, সেটিও উল্লেখ করবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জয়েন্ট কনভেনর জাভেদ রাসিন বলেন, ‘তেল-গ্যাস-কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে লাখ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থান জড়িত। তাই এসব প্রতিষ্ঠান একদিনে বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে তার দল পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখেই নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন করবে।’

পরিবেশ কর্মীরা অভিযোগ করেন, দেশে জ্বালানি খাত নিয়ে নীতিমালা থাকলেও বিগত সরকারগুলো তা মানেনি। কোনো সমীক্ষা ছাড়াই পরিবেশ ধ্বংসকারী প্রকল্প নেয়া হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের সময় পরিবেশগত সমীক্ষার যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হয়নি বলেও তারা জানান।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আগামীতে যে দলই ক্ষমতায় আসুক, প্রতিটি দলকেই নির্বাচনী ইশতেহারে জ্বালানি খাত নিয়ে সুস্পষ্ট পরিকল্পনা রাখতে হবে।

এসএইচ