চলমান প্রবাহে দেশের নারী ক্রিকেটকে যদি মনে করা হয় উদীয়মান কোনো তারকা, তবে সেথায় মধ্যমণি হয়ে আলো বিচ্ছুরণ করছেন শারমিন সুপ্তা। জীবনে ব্যর্থতা যখন একে একে ঢেকে ফেলেছিল আলো দেয়ার শক্তি, তখন একাকী পথে নিজের দুর্বলতাকেই শক্তি বানিয়ে সুপ্তা ফিরেছেন আপন মহিমায়-আরো ভয়ংকর রূপে।
ব্যাটে রান খরা আর বাজে ফর্মের কারণে একসময় দলে জায়গা হারিয়েছিলেন দেশের নারী ক্রিকেটের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান। তবে ১৬ মাস পর যখন ফিরলেন তখন নতুন এক সুপ্তার দেখাই পেল বাংলাদেশ। সবশেষ ১১ ম্যাচে ৫ ফিফটি, আছে নব্বই পেরুনো দুই ইনিংসও। এমন অতিমানবীয় প্রত্যাবর্তনের ক্রেডিটটা অবশ্য সুপ্তা দিচ্ছেন ক্রিকেটে নিজের পিতৃতুল্য কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে।
বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের ক্রিকেটার শারমিন আক্তার সুপ্তা বলেন, ‘শুরু থেকে সালাউদ্দিন স্যার আমার পাশে ছিলেন। এখনো আছেন। বিভিন্ন সিরিজ খেলে আসার পরে আমরা অনুশীলনে না আসলে বড় প্লেয়ারদের দেখিয়ে উদাহরণ দিতেন যে খেলোয়াড়দের কোনো রেস্ট বলতে কিছু নেই।’
অভিজ্ঞতা নাকি মানুষের মাঝে আনে স্থিরতা, আর বাড়ায় দূরদর্শী দিপ্তি। বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে যেভাবে দলের হয়ে ঢালরূপে চালিয়েছেন ব্যাটটা, বিশ্বমঞ্চেও ধরে রাখতে চান তার ধারাবাহিকতা। সাথে কয়েকটি সেঞ্চুরি হাঁকানোর স্বপ্নও বুনছেন আপন মনে।
শারমিন আক্তার সুপ্তা বলেন, ‘আল্লাহ হয়তো এর থেকে বেটার প্লান করে রেখেছে। যা করেছি এর থেকে বেটার প্লান আছে।’
দল হিসেবেও বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সফলতার ছক এঁকেছেন এই নারী ক্রিকেটার। তিন বিভাগে ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে পূরণ হতে পারে দেশের অধরা স্বপ্নটাও-মানছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এবার বিশ্বকাপে সবাই অবদান রেখেছে। সবাই ব্যাটিং করতে পেরেছে। সামনে চার থেকে পাঁচ মাস রয়েছে। ভালো প্রস্তুতি নিতে পারলে আমরা বিশ্বকাপে ভালো করবো।’
পরিশ্রম, অধ্যবসায় আর প্রচেষ্টাই যে বদলে দিতে পারে মানুষের ভাগ্য, শারমিন সুপ্তা যেন দাঁড় করিয়েছেন এমনই দৃষ্টান্ত। নিজের শেষটায় দলকে রেখে যেতে চান এমন স্থানে, যেথায় ক্রিকেটের পরাশক্তিরাও সমীহ করতে বাধ্য হবে বাংলাদেশকে।