বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের নড়বড়ে চেয়ারে ফের ধাক্কা। সরকারের পক্ষ থেকে অনাস্থা আগে থেকেই ছিল।
এবার যোগ হলো ঘরের মানুষদের আস্থাহীনতাও। এখন টেলিভিশন এক বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারে, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বরাবর অনাস্থা চিঠি পাঠিয়েছেন ক্রিকেট বোর্ডের ৮ পরিচালক। এ যেন চলমান অস্থিরতায় সভাপতির জন্য গোঁদের ওপর বিষফোঁড়া।
এখন টেলিভিশনের হাতে এসেছে পরিচালকদের অনাস্থা চিঠিটিও। তাতে বোর্ড সভাপতির বিরুদ্ধে তুলে ধরা হয় বিস্তর অভিযোগ।
ফারুকের বিরুদ্ধে অন্যতম প্রধান অভিযোগ বিসিবির কার্যক্রম পরিচালনা ও দায়িত্ব বন্টনের ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারিতা ও একক আধিপত্য বিস্তার।
এর ফলে, বেশিরভাগ পরিচালক তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব ও কাজ স্বাধীনভাবে পরিচালনা করতে পারছেন না। এমনকি গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে বোর্ড মিটিংয়ের সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে প্রাধান্য দেয়ার কথা থাকলেও সবাইকে পাশ কাটিয়ে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অভিযোগ তোলা হয়।
স্পর্শকাতর অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে— একক সিদ্ধান্তে ব্যাংক থেকে টাকা হস্তান্তর, টেন্ডার-লন্ডারিং এবং যাচাই-বাছাই না করেই বিপিএলে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকানা দেয়ার মত আরো একাধিক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।
সাবেক কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহকে একক সিদ্ধান্তেই অপসারণ করার পুরোনো অভিযোগ জোরদার হয় বোর্ড পরিচালকদের চিঠিতে।

ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি আর অনিয়মে জড়ানোর অভিযোগও তুলেছেন বোর্ড পরিচালকরা। জানিয়েছেন, একক ক্ষমতাবলে ক্লাব দখল করেছেন সাবেক এই অধিনায়ক।
বিগত সরকার পতনের পর ২১ আগস্ট বিসিবির সভাপতির দায়িত্বে বসানো হয় ফারুক আহমেদকে। নয় মাসের দায়িত্বে থাকাকালীন প্রায় পুরোটা সময়েই বিসিবিতে কোনো না কোনো কারণে অস্থিরতা বিরাজ করেছে। আর সবকিছুর জন্যেই এককভাবে বোর্ড সভাপতিকে দায়ী করেছেন বোর্ড পরিচালকরা।
একইসঙ্গে জানিয়েছেন, এসব বিশৃঙ্খলার প্রভাব পড়েছে মাঠের ক্রিকেটেও। যে কারণে দীর্ঘদিন আইসিসি র্যাংকিংয়ে ছয়-সাতে অবস্থান করা বাংলাদেশ নেমে গেছে দশে।
সবমিলিয়ে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অসন্তুষ্টির পর বিসিবির ৮ পরিচালকের সম্মিলিত অভিযোগের পর ফারুক আহমেদ আরো কোণঠাসা হয়ে পড়লেন।
যদিও তিনি পদত্যাগ করার কোনো কারণ খুঁজে পাননি বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন গণমাধ্যমে। তবে বোর্ড পরিচালকদের সম্মিলিত অভিযোগের পর কতক্ষণ টিকে থাকতে পারবেন বা আদৌ পারবেন কি না সেটাই এখন দেখার বিষয়।