ফাইনালের শুরু থেকেই ছিল কঠিন লড়াই। তরুণ ও শক্তিশালী স্প্যানিশ দল আক্রমণ নিয়ে শুরু করলেও, পর্তুগালের রক্ষণ ছিল একেবারে অটুট। রোনালদো ছিলেন মাঠে, তবে তার স্বাভাবিক গতির চেয়ে অনেকটাই ধীর গতিতে খেলছিলেন। প্রতিটি আক্রমণে তিনি দলের সহায়তা করছিলেন, সতীর্থদের সাহস জোগাচ্ছিলেন।
ম্যাচটি যতটা না ছিলো পর্তুগাল বনাম স্পেন, তার চেয়ে বেশি যেন ছিল রোনালদো বনাম ইয়ামাল, বয়স্ক বনাম টিন এজের লড়াই।
মুহুর্মুহু আক্রমণের মাঝে মার্টিন জুবিমেন্ডির গোলে প্রথমে এগিয়ে যায় লা রোজারাই। পিছিয়ে পড়ে যেন গা ঝাড়া দিয়ে ওঠে কন্সেলো-নেতোরা।
পাঁচ মিনিট না পেরোতেই সমতাসূচক গোল করেন নুনো মেন্ডিস, যদিও প্রথমার্ধের শেষ মিনিটেই আবারো এগিয়ে যায় স্পেন। পুরো সময়টা জুড়েই যেন নিজের ছায়া হয়েই ছিলেন স্প্যানিশ ওয়ান্ডার কিড লামিন ইয়ামাল।
ঘড়ির কাঁটায় যখন ৬০ মিনিট পেরিয়েছে তখন রোনালদোর গোলে আবারো সমতায় ফেরে তার দল। যদিও গোল করার পর সেই চিরচেনা ‘স্যু’ উদযাপন করতে দেখা যায়নি ‘সিআর সেভেনকে’। এরপর এক ট্যাকেলের শিকার হয়ে দলকে সমতায় রেখে নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হবার ২ মিনিট আগেই মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।
৯০ মিনিট শেষে ম্যাচের ফলাফল না আসায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। এরপর অতিরিক্ত সময়েও কোনো গোল না হওয়ায় টাইব্রেকারে ভাগ্য নির্ধারণ হয় দু’দলের।
সেখানে ক্যামেরা যেন বারবার খুঁজছিলো সিআর সেভেনকে। তবে তিনি ডাগ আউটে দাঁড়িয়ে নিশ্চুপ, নিশ্চল, প্রার্থনা করছেন গোলের।
প্রথম তিনটি শট দু’দলই গোল পেলেও স্পেনের হয়ে চতুর্থ শট নিতে আসা মোরাতার শট ফিরিয়ে দেন ডিয়াগো কস্তা। শেষ শটে পর্তুগাল গোল করলে পর্তুগালের আরেকটি শিরোপা জয়ে বাঁধভাঙা উল্লাসে ফেটে পড়েন খেলোয়াড়-দর্শকরা, আর আনন্দাশ্রুসহ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রোনালদো।
ট্রফি নেবার সময় তার মুখে এক অদ্ভুত শান্তি। তার হাতে ট্রফি, কিন্তু তার চোখে এক ধরনের ক্ষণিক কষ্ট, তৃপ্তি ও বিজয়ের এক অভূতপূর্ব মিশ্রণ, যে কষ্ট তিনি বহুবার সহ্য করেছেন, বিপর্যয় থেকে উঠে দাঁড়িয়ে সফলতা অর্জনের কষ্ট।