বাছাই পর্ব অন্যবারের মতো শুধুই অংশগ্রহণ নয়, এবার বাংলাদেশের জন্য এ টুর্নামেন্টের গুরুত্ব অন্যরকম। কারণ এবার লক্ষ্য একটাই— চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নেয়া। সেই লক্ষ্য পূরণে ফুটবলার নির্বাচনের ক্ষেত্রেও নেয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ।
জাতীয় দলের নিয়মিত ক্যাম্পে থাকা অনূর্ধ্ব-২৩ বয়সের খেলোয়াড়দের আর সিনিয়র দলে রাখা হয়নি। তাদের ধরে রাখা হয়েছে অনূর্ধ্ব-২৩ দলেই, যাতে তারা নির্বিঘ্নে প্রস্তুতি নিতে পারে এ গুরুত্বপূর্ণ বাছাইপর্বের জন্য।
এ দল নিয়েই সাইফুল বারী টিটুর অধীনে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি ক্যাম্প। ঢাকায় শুরু হওয়া অনুশীলন পর্বের পর সেপ্টেম্বরে ভিয়েতনামে গিয়েই বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে ইয়েমেন, সিঙ্গাপুর ও স্বাগতিক ভিয়েতনামের। চার দলের এ গ্রুপ থেকে কেবল শীর্ষ দল সরাসরি যাবে মূল পর্বে।
দলের প্রাথমিক তালিকায় ১৯ জন খেলোয়াড়কে ডাকা হয়েছে, যাদের মধ্যে শাকিল আহাদ তপু, রফিকুল ইসলাম, পিয়াস আহমেদ নোভা ও রাব্বী হোসেন রাহুলের আছে জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা। তাদের অভিজ্ঞতা এ যুব দলের জন্য হতে পারে বড় শক্তি।
রাহুল বলেন, কোচের পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা ভালো করার চেষ্টা করছি। এবারের দলটা অনেক ব্যালেন্সড একটা দল হয়েছে, যেহেতু সিনিয়র কিছু খেলোয়াড় আছে, আবার জুনিয়রও আছে। সবারই কম-বেশি অভিজ্ঞতা আছে। তাই আশা করি এ বছর আমরা আপনাদের ভালো একটা ফলাফল উপহার দিতে পারবো।’
কোচ সাইফুল বারী টিটু বলেন, ‘আমার মনে হয় না, যেভাবে ন্যাশনাল টিম খেলে— তার বাইরে যাওয়া এই মুহূর্তে যুক্তিযুক্ত হবে। যেহেতু আমারা এরপর হংকংয়ের সঙ্গে খেলবো এবং আমাদের ন্যাশনালের ১৩ জন খেলোয়াড় আছে, তাই আমাদের একই গেম অর্ডারে যাওয়া উচিত।’
প্রতিপক্ষ হিসেবে থাকছে এশিয়ার মধ্যম সারির শক্তিশালী তিনটি দল—ভিয়েতনাম, ইয়েমেন ও সিঙ্গাপুর। তাদের বিপক্ষে লড়াইটা সহজ না হলেও কোচ ও খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস, এ দল দিয়েই কোয়ালিফাই সম্ভব।
আরও পড়ুন:
এদিকে জাতীয় দল নিয়ে কাজ করা বাফুফের ন্যাশনাল টিমস সাব-কমিটিও এবার যুক্ত হয়েছে অনূর্ধ্ব-২৩ দলের পরিকল্পনায়। নতুন কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তাবিথ আউয়াল সরাসরি দেখেছেন জাতীয় দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স, বিশ্লেষণ করেছেন খেলার ধরন ও পরিকল্পনা। সেখান থেকেই অনূর্ধ্ব-২৩ দলের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত আসে।
ন্যাশনাল টিমস কমিটির সদস্য সাঈদ হাসান কানন বলেন, ‘ফেডারেশন থেকে আমরা যদি সব দলের সঙ্গে থাকি, তাহলে আমরা খুব সহজে কোচের সঙ্গে, টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনা করতে পারবো। আলোচনা যত হবে, ততই ইমপ্রুভমেন্ট হবে আমরা মনে করি।’
মূল টুর্নামেন্টের আগে প্রস্তুতিটাও হবে আন্তর্জাতিক মানের। আগামী ১৪ আগস্ট বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দল যাবে বাহরাইনে। সেখানে দুইটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে তারা।
এই ম্যাচগুলোতে দল গুছিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি ভিন্ন কন্ডিশনে নিজেদের খাপ খাওয়ানোর সুযোগও পাবে ফুটবলাররা। এবারের চ্যালেঞ্জ তাই শুধুই মাঠের নয়, মাঠের বাইরের পরিকল্পনাতেও আনতে হচ্ছে পরিবর্তন। আর সেই পথ ধরেই অনূর্ধ্ব-২৩ দলের সামনে এখন নতুন সম্ভাবনার দরজা।