আম উৎপাদনে প্রসিদ্ধ জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। এ জেলাকে ‘আমের রাজধানী’ বলা হয়ে থাকে। দেশের মোট আমের এক তৃতীয়াংশই এখানে উৎপাদিত হয়। দেশের সবচেয়ে বড় আমের হাটটিও বসে এ জেলায়। এখানে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ আম বাণিজ্য হয়।
মৌসুমের শেষ সময়ে এসেও জমজমাট এ আমের বাজার। চাষিরা বাগান থেকে ঝুড়ি বোঝাই করে আম আনেন হাটে। বাজারে চলে দরদাম।
আম চাষিরা জানান, এসময়ও আমের ব্যাপক যোগান আছে। কিন্তু আমের সরবারহ বেশি থাকায় দাম পাচ্ছে না চাষিরা। আশ্বিনা আমের দাম অনেক কম বলে জানান তারা।
তবে বেচাকেনার পরিমাণ ভালো হলেও এবার লাভের মুখ দেখছেন না বলে দাবি কৃষকদের। তারা বলছেন, আমের দাম আর উৎপাদন ব্যয় কাছাকাছি হওয়ায় লাভ কম হচ্ছে, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে পড়তে হচ্ছে লোকসানে।
আরও পড়ুন:
আম চাষিরা আরও জানান, অতি বৃষ্টির কারণে কৃষকেরা ভালো দাম পাচ্ছে না বাজারে। বৃষ্টির কারণে আমের দাম দেড় থেকে দু’হাজার টাকা কম।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ম্যাংগো ফাউন্ডেশন কর্মকর্তারা বলছেন, কানসাট বাজারে এখনো ভরপুর আম বেচাকেনা চলছে। তবে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় কমে এসেছে আমের দাম। আর আমের উপর নির্ভরশীল না হয়ে অন্য ফসল চাষের পরামর্শ কৃষি বিভাগের।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ম্যাংগো ফাউন্ডেশন সদস্য সচিব আহসান হাবিব বলেন, ‘এ বছর টানা বৃষ্টি, অপরিপক্ক আমগুলো পেকে গেছে। আগামী বছর আমরা যদি আমের এ রাজধানীকে বাঁচাতে চাই তাহলে চাষিদের টিকিয়ে রাখতে হবে। আমরা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করবো যেন চাষিদের প্রণোদনা দেয়া হয়।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁপাইনবাবগঞ্জ উপ-পরিচালক ড. ইয়াসীন আলী বলেন, ‘আমের ওপর এককভাবে নির্ভরশীল না হয়ে, অন্যান্য উচ্চমূল্যের যে ফসলগুলো আছে সেই ফলগুলো আবাদের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’
চলতি মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৬ হাজার টন। যার বাজার মূল্য ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা।