ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চালের কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন কল মালিকরা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া
এখন জনপদে
0

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবৈধ চালকলের সঙ্গে মিলে বৈধ চালকল মালিকদের কারসাজিতে বাজার অস্থির হয়ে ওঠার অভিযোগ রয়েছে। বলা হয়, অনুমোদিত পাক্ষিক মজুতের বাইরে অতিরিক্ত চাল অবৈধ চালকলগুলোতে মজুত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করেন অবৈধ অনেক চালকল মালিক। এতে করে বিদেশ থেকে চাল আমদানি করেও সুফল পান না ভোক্তারা।

মেঘনার ভিওসি ঘাটের মোকাম ঘিরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গড়ে উঠেছে আড়াইশোর বেশি চালকল। যেখান থেকে প্রতি দিন অন্তত ১০ কোটি টাকার চাল পাঠানো হয় ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

চালু মজুতের ক্ষেত্রে অটোমেটিক, মেজর ও হাসকিং মিলগুলোয় ছাঁটাই ক্ষমতার দ্বিগুণ চাল ১৫ দিন পর্যন্ত মজুত রাখার অনুমোদন রয়েছে। তবে অভিযোগ রয়েছে, বাজারে সংকটের অজুহাতে দাম বাড়াতে অনেক মিল মালিক এর চেয়ে বেশিদিন চাল মজুত করেন। এর জন্য অনেক সময় অবৈধ মিল ব্যবহার করেন বৈধ মিলাররা। যার ফলে প্রায়ই অস্থির হয়ে ওঠে চালের বাজার।

একজন বলেন, ‘মিল মালিকরা সবাই মিলে সিন্ডিকেট তৈরি করে। ওরা যত বাড়ায় তত দিয়েই কিনতে হয় আমাদের।’

আরেকজন বলেন, ‘কৃষক ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেনা, ভোক্তারা কিনে খেতে পারছে না। মধ্যস্বত্বভোগী যারা রয়েছে, তারা এই সুবিধাগুলো বারবার নিচ্ছে।’

অবৈধ মিলে চাল মজুতের অভিযোগ অস্বীকার করে অবৈধ মজুতের জন্য আড়তদারদের দায়ী করলেন চালকল মালিক সমিতির শীর্ষ নেতা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি জহিরুল ইসলাম জারু মিয়া বলেন, ‘লাইসেন্সবিহীন বিভিন্ন গোডাউনে তারা চাল মজুত করে এবং বাজার মন্দা হলে সেগুলো বিক্রি করে।’

খাদ্য বিভাগ বলছে, মজুতের তথ্য না পাওয়ায় চাল নিয়ে কারসাজির সুযোগ পায় সিন্ডিকেট। নিয়মিত অভিযান চালানোর কথা বলছে জেলা প্রশাসন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কানিজ জাহান বিন্দু বলেন, ‘অনিবন্ধিত মিলগুলোতে আমরা যখন মোবাইল কোর্ট করেছি তখন সেই গুদামগুলোতে অনেক ধরনের মজুত পেয়েছি এবং তাদেরকে জরিমানাও করা হয়েছে।’

অনিবন্ধিত চালকলগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন, ‘অবৈধ গুদামগুলোর ব্যাপারে আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি, জরিমানাও করছি। আশা করছি তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে পারবো।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩০টিরও বেশি অনুমোদনহীন চালকল রয়েছে। সম্প্রতি অবৈধ মজুতের দায়ে একটি চালকলে অভিযানে চালিয়ে জরিমানা করেছে জেলা প্রশাসনের বিশেষ টাস্ক ফোর্স।

এএইচ