যশোর রোড, উপমহাদেশের এক ঐতিহাসিক সড়ক। যশোর থেকে ভারতের পেট্রাপোল হয়ে কোলকাতা পর্যন্ত গেছে সড়কটি। ‘৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ হাজারো শরণার্থী এ সড়ক দিয়ে ভারতে পৌঁছায়। সড়কের দুধারে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ১৭৯ বছর বয়সী ৩ শতাধিক শিশু গাছ। রয়েছে অন্যান্য প্রজাতির আরো অন্তত আড়াই হাজার বড় গাছ।
মহাসড়কের ঝিকরগাছার মল্লিকপুর থেকে নাভারণ, পুরাতন বাজার পর্যন্ত অন্তত ১৫টি শিশু গাছ সড়কের ওপর হেলে পড়েছে। আরো প্রায় ৩০টি মরা ও আধমরা গাছের নিচ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে স্থানীয়রা।
গত পাঁচ বছরে গাছ ভেঙে অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরো অনেকে। হেলে পড়া গাছের কারণে বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়িকে সাইড দিতে না পারায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
পথচারীরা জানান, ৮-১০ টি শিশু গাছ ভেঙে পড়েছে রাস্তায়। অনেক সময় ঢাল ভেঙে পড়ায় অনেকে আহত হচ্ছেন।
ভুক্তভোগী ও সচেতন মহলের দাবি, কয়েক বছর আগে সড়ক সংস্কারের সময় অধিকাংশ পুরাতন গাছের শেকড় কেটে দেওয়া হয়। এ কারণেই মরে যাচ্ছে গাছগুলো। তাই ভালো গাছগুলো রেখে মরা গাছগুলো অপসারণের দাবি স্থানীয়দের।
মরা হেলে পড়া ও শুক্ল ডালপালার ঝুঁকিপুর্ণ গাছ অপসারণে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
যশোর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আছাদুজ্জামান বলেন, ‘হাইকোর্টের যে আদেশ, তাতে গাছগুলো কাটার কোনো সুযোগ নেই। এ ছাড়া স্থানীয় ইউএনও’র নেতৃত্বে ঝুঁকিপূর্ণ যে ডালগুলো রয়েছে, তা কেটে ফেলার কথা হয়েছে।’
যশোর জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘জানমালের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমরা গাছগুলো অপসারণের কথা বলেছি।’
২০১৮ সালে যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক সংস্কারে দুই পাশের গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তখন পরিবেশবাদী সংগঠন ও সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিবাদে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞায় গাছ কাটা বন্ধ হয়ে যায়।