কোরবানির ঈদ সামনে রেখে চাঁদপুরে গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত খামারিরা

গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত খামারিরা
এখন জনপদে
0

কোরবানির ঈদ সামনে রেখে চাঁদপুরে গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত খামারিরা। তবে এবারও জেলায় চাহিদার তুলনায় ঘাটতি থাকছে পশুর সরবরাহ। অথচ পদ্মা-মেঘনার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলেই রয়েছে ঘাটতি পূরণের বিপুল সম্ভাবনা। গো খাদ্যের দাম স্থির থাকায় লাভের আশা করছেন খামারিরা। চরাঞ্চলে গবাদি পশু পালন বৃদ্ধিতে আরো গুরুত্ব দেয়ার কথা বলেছে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।

চাঁদপুরের চরাঞ্চল, যেখানে হাজারো পরিবার প্রতিনিয়ত লড়ে যাচ্ছে জীবিকার জন্য। নদীতে মাছ ধরা আর কৃষিকাজের পাশাপাশি তাদের অন্যতম উপার্জনের পথ এখন গবাদি পশু পালন। সহজলভ্য গো-খাদ্য আর বিস্তৃত চর ভূমির সুবিধায়, চরাঞ্চলের প্রতিটি বাড়িতেই দেখা মেলে গরু ছাগলের পাল।

মেঘনার বুকে জেগে ওঠা কোম্পানির চর, বিধবা সাহানাজ বেগম ঈদকে সামনে রেখে বর্গায় পালন করছেন তিনটি গরু। টানাটানির সংসারে জীবিকা উপার্জনের অন্যতম উৎস গরু পালন।

চরাঞ্চলবাসী সাহানাজ বেগম বলেন, ‘গরুরে ঘাস এনে দেয়। গরুর পিছনে যাচ্ছে আমার সব কষ্ট। আল্লাহ যদি মিলায় তাহলে টাকা দিয়ে ঈদ করবো।’

চরের আরো অনেক নারী সাহনাজের মত স্বপ্ন দেখছেন একটু সচ্ছল জীবনের। পশু পালন আজ শুধু জীবনধারণের পথ নয়, বরং প্রান্তিক অর্থনীতির এক সম্ভাবনাময় দিগন্ত। সহায়তা পেলে আগামীতে আরো বেশি গবাদি পশু পালন করে ক্রেতা চাহিদা মেটানোর আশা এই নারীদের।

নারীদের একজন বলেন, ‘এই পশু বিক্রির টাকা দিয়ে সন্তানদের নতুন জামা কিনে দিবো। স্কুলের বেতন দিবো।’

এদিকে, ঈদকে ঘিরে জমে উঠেছে খামারগুলোও। ছোট-বড় খামারে চলছে গরুর নিয়মিত পরিচর্যা। কাঁচা ঘাসের পাশাপাশি গো খাদ্যের দাম স্বাভাবিক থাকায় লাভের আশা করছেন খামারিরা।

কয়েকজন শ্রমিকদের একজন বলেন, ‘এই কাজের মাধ্যমে আমি বেতন পাচ্ছি। আমার সংসার চলছে।’

মালিক প্রতিনিধির একজন বলেন, ‘চাহিদা থাকার কারণে আগামী আরো বড় পরিসরে খামার করতে চাচ্ছি।’

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার তথ্য অনুযায়ী, জেলায় কোরবানির চাহিদা রয়েছে ৭৬ হাজারের বেশি পশুর, আর প্রস্তুত আছে প্রায় ৬৩ হাজার। এই ঈদে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার গবাদি পশু বেচা-কেনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এছাড়া গবাদি পশুর ঘাটতি কমিয়ে আনতে আগামীতে চরাঞ্চলে আরো নজর দেওয়া হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

চাঁদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জ্যোতির্ময় ভৌমিক বলেন, ‘আমরা নজরদারিতে আছি যেন কোনো ভারতীয় ও মিয়ানমারের গরু না ঢুকতে।’

সঠিক পরিকল্পনা আর সরকারি সহায়তা পেলে চাঁদপুরের শতাধিক চর হয়ে উঠতে পারে গবাদি পশু পালনের তীর্থভূমি। পশু পালন চরাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য বদলের পাশাপাশি জাতীয় পর্যায়েও রাখতে পারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

সেজু