এ সময় তিনি বলেন, ‘উপকূলীয় দ্বীপ হাতিয়ার ইতিহাস বহু পুরানো। স্বাধীনতার এত বছর পার হলেও এ দ্বীপে এখনো কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এখনো অবহেলিত এই দ্বীপের মানুষ। গত ১৭ বছরে এই দ্বীপের কোন উন্নয়নমূলক কাজ মানুষের চোখে পড়েনি। আমি সবাইকে নিয়ে এই দ্বীপের উন্নয়ন কাজে শরিক হতে চাই। হাতিয়ার উন্নয়নের কথা বললেই একশ্রেণীর মানুষের গায়ে জ্বালা পড়া শুরু হয়।’
হান্নান মাসউদ বলেন, ‘আমরা যদি হাতিয়াতে ফেরির ব্যবস্থা করতে চাই তাহলে স্পিডবোট, ট্রলার মালিকদের গায়ে জ্বালাপোড়া শুরু হয়ে যাবে। কারণ, তাদের ব্যবসা হুমকির মুখে পড়বে। আমরা যদি ভূমিহীনদের ভূমি বুঝিয়ে দিতে চাই, আমরা যদি গরীব দুঃখী অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াই তাহলে ভূমি দস্যুদের গায়ে জ্বালাপোড়া শুরু হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি হাতিয়ার সড়ক, রাস্তাঘাট ও অবকাঠামোগত উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করি তাহলে যারা অপরাজনীতি করছে তাদের অপরাজনীতি বন্ধ হয়ে যাবে। সবদিক বিবেচনা করেই আমরা এখানে এসেছি। আমরা মনে করি একটা লড়াই প্রয়োজন। হাতিয়ার মাটি ও মানুষের স্বার্থে সেই লড়াইটা আমাকে-আপনাকে সকলকে মিলেই করতে হবে। আমরা মনে করি একটা দীর্ঘ সংগ্রাম প্রয়োজন, যে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে হাতিয়াতে একটিও ভূমিহীন পরিবার থাকবে না।’
ভূমিহীনদের যুগ যুগ ধরে রাজনৈতিক নেতারা লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহার করে আসছে উল্লেখ করে হান্নান মাসউদ বলেন, ‘এ মানুষগুলোর কথা মিডিয়ায় আসেনা, সুশীল সমাজের চোখে ভাসে না, সাংবাদিকদের দৃষ্টিতে আসে না। অসহায় এসব মানুষের কি অবস্থা সেটি দেখার মত কোনো লোক নেই।’
হাতিয়ার নদী ভাঙ্গনের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘হাতিয়ায় নদী ভাঙ্গন রোধে গত ৫০ বছরে কেউ একটি জিও ব্যাগও ফেলতে পারে নাই। আমি গত দশ মাসে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতনদের সাথে সমন্বয় করে হাতিয়ার প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার এর বেশি জায়গায় ইতোমধ্যে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ সম্পন্ন করেছি। আপনারা যদি আমার সাথে থাকেন, সঙ্গ দেন তাহলে হাতিয়াতে স্থায়ী ব্লক বাঁধ দেয়া হবে। ৫ আগস্টের পর দৌড়াদৌড়ি করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাত ধরে আমি আমার হাতিয়ার নদী ভাঙ্গনের কথা তাকে বলেছি।’
হাতিয়া কলেজের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক মফিজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও ভূমিহীন পরিবারের সদস্য শরিফ উদ্দিনের সঞ্চালনায় এসময় হাতিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. ফিরোজ উদ্দিন, জাতীয় নাগরিক পার্টির সংগঠক ইউসুফ, হাতিয়া নিউমার্কেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।