এ বিশেষ হাটে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে নৌকা বেচাকেনা। দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা আসেন পছন্দসই নৌকার খোঁজে। হাটজুড়ে সারি সারি নৌকার মাঝ থেকে বেছে নেন নিজের চাহিদা অনুযায়ী।
এ হাটে ডিঙি, কোষাসহ পাওয়া যায় নানা ধরনের নৌকা। তবে ডিঙি নৌকার বিক্রি সবচেয়ে বেশি। চাহিদার শীর্ষে চাম্বুল, কড়ই আর মেহগনি কাঠের নৌকা।
আকার, কাঠ ও কারিগরি দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে প্রতি নৌকার দাম পড়ে ৪ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে নৌকার বাড়তি দাম নিয়ে অভিযোগ রয়েছে ক্রেতাদের।
ক্রেতাদের মধ্যে একজন জানান, হাট ঘুরে নৌকা কিনছেন তিনি, তবে নৌকার দাম কিছুটা বেশি মনে হয়েছে তার কাছে।
এদিকে বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে সব পণ্যের দাম বাড়তি। আগের বছরের চেয়ে এবার কাঠ, লোহা ও কারিগরদের মজুরিসহ অন্যান্য খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই নৌকার দামও কিছুটা বেড়েছে।
বিক্রেতাদের মধ্যে একজন জানান, আগে ৭০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকায় নৌকা বেচলেও এখন তা ৭ থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন তিনি।
পানি বাড়লে যখন রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যায় তখন তাদের বেশি নৌকা বিক্রি হয় বলেও জানান কেউ কেউ।
দুইশো বছরের ঐতিহ্যবাহী এ হাট বর্তমানে পুরোদস্তুর বাণিজ্যিক হাটে রূপ নিয়েছে। পানি বাড়লেই বাড়ে হাটের বেচাকেনা। প্রতি হাটে বিক্রি হয় চার থেকে পাঁচ লাখ টাকার নৌকা।
মানিকগঞ্জ ঘিওর নৌকার হাটের ইজারাদারের প্রতিনিধি প্রধান সিদ্দিকী বলেন, ‘সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নৌকা বিক্রি হয়। পানির সঙ্গে সঙ্গে নদীতে নৌকার সংখ্যা বাড়ে। ভরা মৌসুমে প্রায় ২০০ নৌকা বিক্রি হয়।’
ঐতিহ্য আর প্রয়োজনের মিশেলে ঘিওরের এ ডিঙি নৌকার হাট এখন গ্রামীণ অর্থনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রবিন্দু। যেখানে কর্মসংস্থান হয় মানিকগঞ্জসহ আশপাশের অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী ও কারিগরের। নদীর পানি বাড়লে বেচাকেনার অংক দাঁড়ায় দ্বিগুণে।