রংপুরে এলপিজি স্টেশনে বিস্ফোরণ, একজন নিহত

রংপুরে ফিলিং স্টেশনের গ্যাস সংরক্ষণাগারে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে
এখন জনপদে
0

রংপুরে এলপিজি স্টেশনে বিস্ফোরণে একজন নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও অন্তত চারজন। আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। আজ (শনিবার, ১৯ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে রংপুর-সৈয়দপুর মহাসড়কের সিও বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে জানা যায়, রংপুর-সৈয়দপুর মহাসড়কের সিও বাজার এলাকায় এলপিজি স্টেশনের রিজার্ভার মেরামতের সময় বিকট শব্দের বিস্ফোরণে ফেটে যায় আশেপাশের ভবনের দরজা ও জানালার গ্লাস। দুমড়ে মুচড়ে যায় দুর্ঘটনা স্থলে থাকা কয়েকটি গাড়ি। আবাসিক এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিষ্ঠান মেরামতে মালিক পক্ষের এমন উদাসীনতায় ক্ষোভ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

কোথাও লেগে আছে রক্তের দাগ, কোথাও পড়ে আছে ভাঙ্গা দেয়ালের খণ্ডাংশ। ডানে বামে তাকালেই চোখে পড়ে এম্বুলেন্স, প্রাইভেট কার আর বাসের ক্ষতচিহ্ন। বাদ যায়নি আশেপাশের ভবনে জানালা কিংবা থাই গ্লাস। এমন দৃশ্য রংপুরের সিও বাজারে এলপিজি স্টেশনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রংপুর-সৈয়দপুর মহাসড়কের মেসার্স সিও বাজার এলপিজি স্টেশনে গত সপ্তাহে সৃষ্টি হওয়া রিজার্ভার মেরামতের সময় বিকট শব্দে ঘটে বিস্ফোরণের ঘটনা। এতে ঘটনাস্থলে নিহত হন সেখানে কর্মরত প্রকৌশলী। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফিলিং স্টেশনে পার্কিংয়ে থাকা অন্তত বিশটি গাড়ি। বিকট শব্দে আশেপাশের ভবনে ফাটল ছাড়াও উড়ে যায় কয়েকটি টিনের ঘর।

রংপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, ‘সিও বাজারের এলপিজি অটো গ্যাস সেন্টারে মেরামতের কাজ চলাকালে হঠাৎ গ্যাস ট্যাংকে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ট্যাংক ও যন্ত্রপাতি ছিটকে পড়ে। আশপাশে রাখা অন্তত ২০টি অ্যাম্বুলেন্স ও মাইক্রোবাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে চলাচলকারী দুটি বাসও আঘাতপ্রাপ্ত হয়।’

এসময় ঘটনাস্থলের পাশের সড়কে চলমান ঢাকাগামী একটি কোচও ক্ষতির শিকার হয়। উৎসুক জনতার ভিড় সামাল দিতে মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট। আবাসিক এলাকায় এমন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ মেরামতে মালিক পক্ষের উদাসীনতায় ক্ষোভ জানান এলাকাবাসী।

রংপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ সহকারী পরিচালক বাদশা মাসউদ আলম জানান, স্টেশনটি মেরামতের জন্য বন্ধ ছিল। ট্যাংকে গ্যাসের অতিরিক্ত চাপের সৃষ্টি হওয়াতে বিস্ফোরণ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আহতদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এসময় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তারা জানান, বায়ুর অতিরিক্ত চাপই এমন দুর্ঘটনার কারণ বলে মনে করছেন তারা।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান বলেন, ‘বিস্ফোরণে আহত একজন পুরুষ (৪৫) হাসপাতালে মারা গেছেন। তাঁর নাম পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।’

দুর্ঘটনায় একজন নিহত ছাড়াও গুরুত্বর আরও ৪ জন সহ ১২ থেকে ১৫ জানকে ভর্তি করা হয়েছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এখনো পর্যন্ত মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা না গেলেও, তদন্ত কমিটি গঠন করে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি এলাকাবাসীর।


ইএ