এর আগে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা হুমায়ূন আহমেদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিয়ে কবিকে স্মরণ করেন। এছাড়াও কবির স্মরণে বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে শুরু হয়ে একটি শোক র্যালি বিদ্যালয়ের সামনের সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। পরে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে হুমায়ূন আহমেদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
নন্দিতা কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোণার মোহনগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৬ সালে পৈত্রিক ভিটা নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় কুতুবপুর গ্রামে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে স্থাপন করেন শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ। ২০১২ সালের এ দিনে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে মধ্যাহ্ন, জোছনা ও জননীর গল্প, দেয়াল, মাতাল হাওয়া, শঙ্খনীল কারাগার, শ্রাবণ মেঘের দিন, গল্প, কবি, লীলাবতী, গৌরীপুর জংশন ইত্যাদি। উপন্যাসে তিনি তৈরি করেছেন হিমু, মিসির আলী, শুভ্রের মতো কালজয়ী চরিত্র। এসব চরিত্র প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে অব্যাহতভাবে এখনো জনপ্রিয়তার শীর্ষে।
টিভি নাট্যকার হিসেবেও হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন অনন্য। গত শতকের আশির দশকের মাঝামাঝি প্রচারিত তার লেখা ধারাবাহিক নাটক ‘এইসব দিনরাত্রি’ দিয়ে টিভি দর্শকের হৃদয় জয় করে নেন তিনি। নাটক ছাড়াও তিনি সিনেমা নির্মাণে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছেন। তাঁর পরিচালিত সিনেমার মধ্যে ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ এবং ‘ঘেঁটুপুত্র কমলা’ বিশেষভাবে প্রশংসিত।
তার অসামান্য সাহিত্য কীর্তি বাঙালি ও বাংলাদেশের সম্পদ। কীর্তির স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৯৪ সালে ‘একুশে পদক’ লাভ করেন। এছাড়া তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮) লাভ করেন।