নিহত সিয়াম সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. সালাউদ্দিন সরদারের বড় ছেলে। খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে জাতীয় হিফজ প্রতিযোগিতায় সে একাধিকবার পুরস্কার পেয়েছে বলেও জানা গেছে।
পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, তৌফিক সিয়াম ঢাকার ‘মারকাজু ফয়জিল কোরআন আল ইসলামিয়া’ মাদ্রাসার মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তার পরিবারের দাবি, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে বাথরুমে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে, যাতে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে প্রচার করা যায়।
তৌফিকের বাবা সালাউদ্দিন সরদার বলেন, ‘আমার ছেলে কখনো আত্মহত্যা করতে পারে না। সে ধর্মভীরু, শৃঙ্খলা পরায়ণ এবং পড়াশোনায় অত্যন্ত ভালো ছিল। বহুবার জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার পেয়েছে। এটা স্পষ্ট হত্যাকাণ্ড। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত চাই।’
তৌফিকের আত্মীয় এম শরিফ উদ্দিন বলেন, ‘কয়েকদিন আগে সালাউদ্দিন তার ছেলেকে দেখতে মাদ্রাসায় যান। আজ হঠাৎ জানানো হয়, ছেলেটি আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু ঢাকায় গিয়ে দেখা যায়, তার মরদেহ বাথরুমে ঝুলন্ত অবস্থায়। এক পা টয়লেটের প্যানের ভেতর, আরেক পা ভাঁজ হয়ে মেঝেতে ঠেকানো ছিল। এ অবস্থায় আত্মহত্যা কীভাবে সম্ভব? এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। নিশ্চয়ই এখানে রহস্য আছে।’
ঢাকায় অবস্থানরত তৌফিকের চাচা আকছেদ আলী বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমি মাদ্রাসায় যাই। দেখি পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করছে। একটি ছবিতে তার একটি পা মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। রহস্যজনক মনে হওয়ায় আমি নিজেই ময়নাতদন্তের অনুরোধ জানাই। পরে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়।’
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকার দারুস সালাম থানার এএসআই আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা মরদেহটি উদ্ধার করি। নিহতের শরীরের দুটি স্থানে বেতের আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরিবারের অনুরোধে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিবেদন এলে বিস্তারিত জানা যাবে। তদন্তের স্বার্থে আপাতত কিছু বলা যাচ্ছে না।’
তৌফিকের মৃত্যুর খবরে সাতক্ষীরার গাবুরা ও আশপাশের এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকাবাসী ও স্বজনদের দাবি, এই মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা হোক, এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনা হোক।