মাইক্রোবাসে করে সিরাজগঞ্জে অসুস্থ রোগী দেখতে যাচ্ছিলেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের একটি পরিবার। মাছ-মাংসসহ কাঁচা পণ্য তখনও গাড়িতে। সবকিছু থাকলেও নেই মাইক্রোবাসের যাত্রীরা। এ যাত্রা-ই যে তাদের শেষ যাত্রা হতে যাচ্ছে তা জানতো না কেউ।
আজ (বুধবার, ২৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাইক্রোবাসটি নাটোরের বনপাড়া হাটিকুমরুল মহাসড়কের শ্রীরামপুর এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে দ্রুতগতিতে আসা ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন ৫ জন। এছাড়াও গুরুতর আহত হন তিন জন। পরে তাদেরকে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হলে আরও একজনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে ৫ জনই নারী বলে জানা গেছে।
পারিবারিক সূত্রে পাওয়া তথ্যানুযায়ী নিহতরা হলো— জাহিদুল ইসলাম, তার স্ত্রী শেলি, শেলির বোন আঞ্জুমান আরা, তার বোন আন্নি, খালা লিমা ও আনু বেগম। নিহত সকলের বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ এলাকায়।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে তারা পাঁচজনকে মৃত পেয়েছেন। তারা জানান, গাড়ির ভেতরেই মারা যান ওই যাত্রীরা। এরপর এলাকাবাসীরা কয়েকজন মিলে মরদেহ গাড়ির ভেতর থেকে বের করে আনেন বলেও জানিয়েছেন তারা। স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, দুইটি গাড়ি-ই ওভার স্পিডে থাকার কারণেই এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
সড়ক দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন জেলা পুলিশ সুপার, হাইওয়ে পুলিশসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। দুর্ঘটনাকবলিত মাইক্রোবাস, ট্রাক এবং মরদেহগুলো নেয়া হয় বনপাড়া হাইওয়ে থানায়। পুলিশ বলছে, ট্রাকটি উল্টোপথে আসার পাশাপাশি বেপরোয়া গতিই দুর্ঘটনার কারণ।
বনপাড়া হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইসমাইল বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক তদন্ত থেকে মনে হচ্ছে ট্রাকটি রং-সাইডে চলার চেষ্টা করছিল। ট্রাকটি নিজের লেনে থাকলে এ দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।’
বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়ক দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা হিসেবে অনেক আগে থেকেই চিহ্নিত। মহাসড়কটি কম প্রশস্ত হওয়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত গাড়ির কারণে মাঝেমধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। মহাসড়কটি প্রশস্ত করা হলে দুর্ঘটনার পরিমাণ কমে আসবে— এমন প্রত্যাশা স্থানীয়দের।