অনাবৃষ্টিতে পঞ্চগড়ে ব্যাহত হচ্ছে আমন চাষাবাদ

অনাবৃষ্টিতে শুকিয়ে গেছে ধানের ক্ষেত
এখন জনপদে
0

অনাবৃষ্টিতে এবার পঞ্চগড়ে ব্যাহত হচ্ছে আমন চাষাবাদ। অন্য বছরগুলোতে এই সময়ে চারা রোপণ শেষ হয়ে গেলেও এবার অন্তত ৬০ হাজার হেক্টর জমি পতিত পড়ে রয়েছে। রোদে পুড়ে নষ্ট হচ্ছে বীজতলা। তাই দুশ্চিন্তায় চাষিরা। এদিকে কেউ কেউ সেচ দিয়ে চারা রোপণ করছেন। এতে উৎপাদন খরচ কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ায় শঙ্কা চাষিদের।

ভরা বর্ষাকালেও উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে অবিরাম বর্ষণের বদলে চলছে খরতাপ। ফেটে গেছে ফসলি জমি। বৈরি আবহাওয়ায় বৃষ্টি নির্ভর আমন চাষাবাদে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন প্রান্তিক চাষিরা। সূর্যের কড়া তাপে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বীজতলা।

চাষিরা জানান, বৃষ্টি না থাকায় তাদের সেচ দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। কিন্তু সেচ দিতে হয় দুই তিনবার, একবার দিলে কাজ হয়না।

এক সময়ে আষাঢ়-শ্রাবণে বৃষ্টির জমা পানিতে আমন চাষাবাদ করতেন চাষিরা। কিন্তু গত কয়েক বছরে বৃষ্টিপাত কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। গত বছর জুলাই মাসে বৃষ্টি হয় ৭৭৭ মিলিমিটার। আর এ বছর এখন পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ১৯৬ মিলিমিটার। তাই সময়মতো বৃষ্টি না মেলায় বড় প্রভাব পড়েছে আমন চাষে।

স্থানীয় চাষিরা জানান, যারা সেচ দিতে পারছে তাদের ফসল ঠিক আছে। আর যারা সেচ দিতে পারছে না তাদের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

সময়ের সাথে সাথে বদলে যাচ্ছে ঋতুচক্রও। অন্য বছরগুলোতে আষাঢ়েই আমন রোপণের কাজ শেষ করতেন চাষিরা। এবার শ্রাবণের ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক জমিতে হয়নি চাষাবাদ । তবে কেউ কেউ জমিতে সেচ দিয়ে চারা রোপণ করেছেন । তবে এতে উৎপাদন খরচ কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা চাষিদের।

তারা জানান, যাদের মোটর আছে তাদের ফসল ঠিক আছে। অন্যসময় কোমর সমান পানি থাকলেও এবার পানির দেখাই নেই। মোটরে খরচ বেশি হওয়ায় অন্যান্যবারের চেয়ে প্রায় দেড়গুণ বেশি খরচ হচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় এবার ১ লাখ ৩০ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এখন পর্যন্ত চাষাবাদ হয়েছে মাত্র ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে। বৃষ্টি না হলে আমনের আবাদ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা কৃষি সংশ্লিষ্টদের।

পঞ্চগড় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আব্দুল মতিন বলেন, ‘আমরা চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছি তারা যেন দুই একটি সেচ দিয়ে চাষের কাজ শেষ করে ফেলেন। এতে করে দেখা যাবে দুই একটা সেচের খরচ ছাড়া তাদের আর কোন বিকল্প খরচ নেই।’

ধানের চারায় সবুজে ভরে যেতো যে ক্ষেত সেখানে এখন চড়ছে গরু, ছাগল। শুকনো মাঠ আর অসহায় চাষিদের অপেক্ষা কেবল আকাশের অবারিত বর্ষণের।

ইএ