ফরিদপুরে দুই হাজার কোটি টাকার পাট উৎপাদনের সম্ভাবনা

চাষিরা পাট সংগ্রহে ব্যস্ত
অর্থনীতি
এখন জনপদে
0

হঠাৎ বর্ষণে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন ফরিদপুরের পাটচাষিরা। পানির সংকটে যখন জাগ দেয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন কৃষকরা; ঠিক তখনই এই বৃষ্টি যেন আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। দেশের মধ্যাঞ্চলের কৃষিনির্ভর জেলা ফরিদপুর, যা পাটের রাজধানী হিসেবেই পরিচিত।

চলতি মৌসুমে ফরিদপুর জেলায় পাটের আবাদ হয়েছে ৮৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এবার দুই লক্ষাধিক মেট্রিক টন পাট উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে, যার বাজারমূল্য দাঁড়াতে পারে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি।

জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে চরভদ্রাসন ছাড়া বাকি আটটি উপজেলায় ব্যাপকভাবে পাট চাষ হয়। এসব এলাকায় মাঠজুড়ে এখন চলছে পাট কাটার ব্যস্ততা। কেউ জমি থেকে পাট কাটছেন, কেউ আঁটি বেঁধে নিয়ে যাচ্ছেন পানিতে জাগ দেয়ার জন্য, আবার কেউ বা আঁশ ছাড়িয়ে তা রোদে শুকাচ্ছেন।

সালথা, নগরকান্দা, বোয়ালমারী, মধুখালী, আলফাডাঙ্গা, ভাঙ্গা, সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার মাঠে ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা এখন পাট ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

পাটচাষিরা বলছেন, মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টির অভাবে তাদের সেচ দিয়ে বীজ বপন করতে হয়েছে, এতে ব্যয় বেড়েছে বহুগুণ। বোয়ালমারীর কৃষক মনিরুজ্জামান, আশুতোষ ও দেলোয়ার হোসেন জানান, প্রতি মণ পাট বাজারে তুলতে খরচ পড়ছে প্রায় চার হাজার টাকা। তাই প্রতি মণ পাট যদি পাঁচ হাজার টাকার নিচে বিক্রি হয়, তবে লোকসান গুনতে হবে।

তবে এবার পর্যাপ্ত বৃষ্টির কারণে পাট পচাতে সমস্যা হচ্ছে না বলেও জানালেন তারা। আশা করছেন, এবারে আঁশ হবে উজ্জ্বল ও টেকসই।

ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ফরিদপুরের বেলে দোআঁশ ও এঁটেল দোআঁশ মাটি পাটচাষের জন্য আদর্শ। এখানকার উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ুও পাট উৎপাদনের অনুকূল।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শাহাদুজ্জামান জানান, ‘চাষিরা এবারে ভালো মানের আঁশ পাবেন বলে আমরা আশা করছি। পাট পচানোর সময় পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় রংও সুন্দর হবে। বাজারদরও ভালো থাকবে বলে মনে করছি।’

এনএইচ