মানিকগঞ্জে বেশি দামে সেলাই মেশিন কেনায় বিতরণ স্থগিত

সেলাই মেশিন বিতরণ স্থগিত
এখন জনপদে
0

সরকারি সহায়তায় দরিদ্র নারীদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য সেলাই মেশিন বিতরণ করা হচ্ছিলো মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার সুতালড়ি ইউনিয়নে। উদ্দেশ্য প্রশংসনীয় হলেও প্রকল্প বাস্তবায়নে দেখা দিয়েছে বড় ধরনের অনিয়ম।

বাজারমূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দামে কেনা হয়েছে সেলাই মেশিন। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রকল্প কমিটির একাংশের সংশ্লিষ্টতায় অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে সরকারি অর্থ লোপাটের চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অর্থায়নে দরিদ্র নারীদের মাঝে ১৮টি সেলাই মেশিন বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে সেলাই মেশিনের একেকটির মূল্য ধরা হয় ১৪ হাজার টাকা করে। অথচ স্থানীয় বাজারে মেশিনটির মূল্য আট থেকে নয় হাজার টাকার মধ্যে। যা ইউএনওর প্রশ্নে প্রকট হয়ে ওঠে।

প্রকল্পে অন্তত লাখ টাকার কাছাকাছি অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে সরকারকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল (মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই) বিকেলে হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কোহিনুর আক্তার বিতরণ কার্যক্রমে অংশ নেন। এসময় তিনি সেলাই মেশিনের দাম জানতে চাইলে প্রকল্পে উল্লিখিত মূল্য ও বাজারমূল্যের ফারাক চোখে পড়ে। তাৎক্ষণিক তিনি মেশিন বিতরণ বন্ধ করেন এবং তদন্তের নির্দেশ দেন।

অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী রিপন আলী, ইউপি সচিব মঞ্জুরুল হক এবং প্রকল্প সভাপতি ইউপি সদস্য সোলাইমানের বিরুদ্ধে।

দায় অস্বীকার করে উপসহকারী রিপন আলী বলেন, ‘বাজার যাচাই করেই সেলাই মেশিন ক্রয়ের এস্টিমেট খরচ তৈরি করা হয়েছে। আর ক্রয়ের সাথে আমি জড়িত নই। ইউপি সচিব, প্রকল্প কমিটির সদস্যরা বলতে পারেন। আর এখনও তো বিলই হয়নি। তারা নিজের টাকা দিয়ে কিনতে পারেন।’

সুতালড়ি ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হক বলেন, ‘এলজিইডি উপসহকারী প্রকৌশলীর দেয়া এস্টিমেট খরচ অনুযায়ী ক্রয় করা হয়েছে। আর ক্রয় করেছে কমিটি। আমি কমিটির সাথে মানিকগঞ্জ গিয়েছিলাম অন্য কাজে। আমি ক্রয় করিনি।’

আর প্রকল্প সভাপতি সোলায়মান বলেন, ‘আমি এর আগে কখনও এমন প্রকল্পে ছিলাম না, অভিজ্ঞতাও নেই।’

এলাকাবাসীর অভিযোগ, এটি একটি পরিকল্পিত অনিয়ম। সরকারি অর্থ লোপাটের উদ্দেশেই প্রকল্পে অতিরিক্ত মূল্য দেখানো হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘যে মেশিন আট থেকে নয় হাজার টাকায় মেলে, তা ১৪ হাজার দেখিয়ে কেনা হলো কেন? এটা খোলা চুরি। প্রশাসনের কাছে দাবি, এই ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে।’

ইউএনও কোহিনুর আক্তার বলেন, ‘সেলাই মেশিনের বাজারমূল্যের সঙ্গে প্রকল্পে দেখানো দামের ব্যবধান রয়েছে। সরকারি অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতেই বিতরণ স্থগিত রাখা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এসএস