ক্যামেরা দেখে ভোগান্তির কথা জানাতে আসেন খুলনার রূপসা ঘাট পার হওয়া যাত্রীরা। দিনের পর দিন ঘাটের পারাপারে ভোগান্তি এখন চরমে পৌঁছেছে।
রূপসা, ভৈরব, শিবসা, ময়ূরসহ বেশ কিছু নদনদী ঘিরে রেখেছে খুলনা শহর। দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কিছু জেলার মানুষ খান জাহান আলী সেতু ছাড়াও বিভিন্ন ঘাট ব্যবহার করে নদী পার হন।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পার হন রূপসা ঘাট দিয়ে। প্রতিদিন এই ঘাট ব্যবহার করেন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। ঘাটের অব্যবস্থাপনায় হতাশ স্থানীয়রা।
ঘাটের দু’পাশে রয়েছে দু’টি পল্টুন। কিছুদিন আগে পল্টুন পরিবর্তন করলেও উঁচু হওয়ায় পারাপারে সমস্যায় পড়ছে মানুষ, প্রায়-ই ঘটছে দুর্ঘটনা। পল্টুনে ওঠার গ্যাংওয়ের অবস্থাও বেশ খারাপ।
গণঅভ্যুত্থানের পর রূপসা ঘাট পারাপারে দিতে হয় বাড়তি টাকা। টাকা না দিলে হেনস্তার শিকারও হতে হয়। এ ঘাটের ঠিক পাশেই রয়েছে জলখানা ঘাট, সেখান থেকে প্রতিদিন হাজারো মানুষ পার হলেও নেয়া হয় না টোল।
কোনো প্রকার সংস্কার ছাড়াই বেশি হারে টোল আদায় অনুচিত বলে মনে করছেন অনেকেই। তবে অনিয়মের কথা অস্বীকার করছে টোল আদায়কারীরা।
আরও পড়ুন:
আগে ঘাটের টোল আদায় করত খুলনা সিটি করপোরেশন। অভ্যুত্থানের পর নিয়ন্ত্রণ নেয় অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ। সেপ্টেম্বর থেকে খাস ডাকের মাধ্যমে জনপ্রতি দুই টাকা করে টোল আদায়ে রাজস্ব আদায় দ্বিগুণ হওয়ার কথা থাকলেও ঘটেছে উল্টো।
গত ১ বছরে সংস্থার কোষাগারে জমা হয়েছে মাত্র ২৫ লাখ ৮ হাজার টাকা। এছাড়াও আলী আকবর নামে এক ইজারাদার প্রতি মাসেই বাড়িয়ে যাচ্ছে ইজারার মেয়াদ। তবে এবার আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ওপেন টেন্ডারের ডাক দেয়ায় রাজস্ব বাড়বে বলে জানায় বিআইডাব্লিউটিএ।
খুলনা অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘নৌপথে যাত্রা স্বাভাবিক রাখতে নিয়মিত আমাদের নৌপথে মার্কা, বয়া, বিকন ইত্যাদি স্থাপন করা হয়ে থাকে।’
ঘাটে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি প্রয়োজন বলে মনে করছেন নাগরিক নেতারা। পাশাপাশি নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ইজারা দেয়ার কথা জানান তারা।
খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাড. বাবুল হাওলাদার বলেন, ‘হরিলুটের মতো অবস্থা সেখানে। একদিকে যাত্রীরা ট্রলার ভাড়া দিয়ে আসেন, আবার দু’পাড়ে টোল দেন, সেটা আবার বৃদ্ধি করা হয়েছে। নৌকা ভাড়াও বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং আরেকটা বিষয় দুঃখজন যে, মানুষের একটা ব্যাগ বা বোঝা তুললেই টাকা দিতে হবে, তাদের লেবার কাজে লাগাক বা না লাগাক।’
ইজারাদারদের দৌরাত্ম্য থেকে রেহাই পেতে টোল মুক্ত ঘাট চান স্থানীয়রা।