চট্টগ্রাম নগরীর ব্যস্ততম সড়কের মোড় দুই নম্বর গেইটের চিত্র এমন যে, সড়কের বড় একটি অংশ দখল করে বসানো হয়েছে বড় বড় ডাস্টবিন। চারপাশে ছড়ানো খোলা ময়লা-আবর্জনা। অথচ এটিই শহরের প্রধান সড়ক। তীব্র দুর্গন্ধে ভর দুপুরে এ সড়কে নাক চেপে হাঁটতে হচ্ছে নগরবাসীকে। আশপাশে অফিস, শপিং মল, মার্কেট, দোকানপাট, খাবারের হোটেলসহ বাসা বাড়ি।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন স্থান থেকে ছোটো ভ্যানে করে আবর্জনা এনে ফেলা হচ্ছে। ভরদুপুরে বর্জ্য অপসারণে কাজ করছেন পরিচ্ছন্ন কর্মীরা। তীব্র দুর্গন্ধ আর আবর্জনা মাড়িয়ে হাঁটা দায়। অথচ মেয়র ঘোষণা দিয়েছিলেন, দিনে নয়, রাতেই হবে শহরের ময়লা পরিষ্কার কার্যক্রম।
স্থানীয়রা জানান, অনেকদিন যাবৎ কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এতে ক্রমেই স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে স্থানীয়দের। পুরো এলাকাজুড়ে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।
চট্টগ্রাম নগরীতে প্রায় ১ হাজার ডাস্টবিন রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশই খোলা। শুধু এ মোড়ে নয় সড়কের ওপর এমন ডাস্টবিন নগরীর বিভিন্ন জায়গায়। কাতালগঞ্জ, আগ্রাবাদ, কাজীর দেউড়ি বিএনপি কার্যালয়, বহদ্দারহাটসহ সব জায়গায় দুর্ভোগের চিত্র একই রকম।
প্রশ্ন হচ্ছে, গত তিন মেয়রের সবাই এ নগরীকে ক্লিন, গ্রীন ও হেলদি সিটি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু আবর্জনা সংগ্রহকে আনতে পারেননি কোনো আধুনিক মডেলে। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, গেলো অর্থ বছরে পরিচ্ছন্নতার জন্য নগরবাসী ১৩১ কোটি টাকা করও দিয়েছে সিটি করপোরেশনকে। কিন্তু তবুও কেন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার এমন বেহাল দশা?
আরও পড়ুন:
ইপসার সহকারী পরিচালক আবদুস সবুর বলেন, ‘একটা শহরের ৬০ শতাংশ বর্জ্য যদি রাস্তার আশপাশ বা খোলা জায়গায় ফেলা হয়, তাহলে সেই শহরের পরিবেশ খারাপ হওয়া স্বাভাবিক। মাত্র ৬ থেকে ৯টা স্টেজ কিন্তু এরকম শহরের জন্য খুবই কম।’
এসব বর্জ্য সংগ্রহের পর খোলা ট্রাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ডাম্পিং স্টেশনে। দিনে কিংবা রাতে এসব ট্রাক থেকে আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে তীব্র দূর্গন্ধ।
বর্জ্য থেকে বিদুৎ কিংবা সার তৈরির মতো মুখরোচক আলোচনা শোনা যাচ্ছে এক দশক ধরে। কিন্তু ব্যবস্থাপনার বিষয়টি এখনও কেন কোন শৃঙ্খলায় আনা গেলো না?
চসিকের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘এরই মধ্যে জাপান এবং কোরিয়া যৌথ উদ্যোগে একটি কোম্পানি আমাদের সঙ্গে সাইনিং হয়েছে। তারা দ্রুত এ কাজগুলো করবে। এর মধ্যে আপনারা জানেন, অন্যান্য অনেকগুলো দেশের প্রতিনিধি আমাদের কাছে এসেছিল। ইনশা আল্লাহ জাপান-কোরিয়া দ্রুত আমাদের সঙ্গে কাজ শুরু করবে।’
বর্তমানে নগরীতে প্রতিদিন বর্জ্য উৎপাদন হয় ৩ হাজার টন, যার ২ হাজার টন সংগ্রহ করে সিটি করপোরেশন, বাকি ১ হাজার টন খাল নালা হয়ে মিশছে কর্ণফুলী নদীতে।