মনু ও ধলাই নদীর তীরে বসবাস মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, কমলগঞ্জ, রাজনগর ও সদর উপজেলার লাখো মানুষের। এক সময় নদী দুটি আশীর্বাদ হলেও এখন বর্ষা এলেই নদী ভাঙন আর বন্যা-আতঙ্ক বেড়ে যায় দুই পাড়ের বাসিন্দাদের।
নদী ভাঙনরোধে হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নেয়া হলেও দফায় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়েও শেষ হচ্ছেনা কাজ। এদিকে, বিএসএফের বাধার কারণে কমলগঞ্জের মখাবিল এলাকা ও কুলাউড়ার শরীফপুর ও পৃমিপাশা এলাকায় বেড়িবাঁধের কাজ বন্ধ বলে জানান এলাকাবাসী। এতে যেকোনো সময় নদীর পানি বেড়ে ঘরবাড়ি, ফসল নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় এলাকাবাসী। এছাড়া, অবৈধভাবে ও অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের কারণে হুমকিতে পড়েছে ব্রিজ ও বেড়িবাঁধও।
স্থানীয়রা জানান, বালু উত্তোলনের কারণে নিচের বালুর খনিটা নেই, এ কারণে ব্রিজ ভেঙে পড়ছে। ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। এ অবস্থার কারণে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিতে হয়েছে অনেক পরিবারকে।
মৌলভীবাজার কৃষক সমিতির সভাপতি মো. আব্দুল লতিফ বলেন, ‘বিএসএফের বাধার কারণে এখানে কাজ হচ্ছেনা। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি অনতিবিলম্বে এ সমস্যা সমাধানের জন্য। মানুষ যে আশঙ্কার মধ্যে আছে সে আশঙ্কা থেকে মানুষকে মুক্ত করার জন্য।’
আরও পড়ুন:
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন জটিলতার কারণে প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকলেও দ্রুতই বাঁধ মেরামতে কাজ শুরু হবে। আর জেলা প্রশাসক জানান, অধিগ্রহণের টাকা বরাদ্দ পেলেই সমস্যা সমাধানে স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মৌলভীবাজারের পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী খালিদ বিন ওয়ালিদ বলেন, ‘আমরা সব জায়গায় কাজ করে রেখেছি। আর বাঁধের কাজ আমাদের প্রজেক্টের আওতায় না। আমরা অনেক আগেই মেরামতের আন্ডারে চেষ্টা করেছি এটা বন্ধ করার। কিন্তু বিএসএফের কারণে তা সম্ভব হয়নি। আমরা আবার উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি, খুব দ্রুতই কাজ শুরু করতে পারবো।’
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. ঈসরাইল হোসেন বলেন, ‘রাজনগর উপজেলায় আমাদের এলএকেসের পেমেন্ট চলমান রয়েছে। আমরা প্রতি সপ্তাহে পেমেন্ট দিয়ে দিচ্ছি। আমাদের লোকবলের যে সংকট আছে, আমাদের সার্ভেয়ারের সংকট আছে। এছাড়া ল্যান্ড অ্যাকুইজেশন অফিসারসহ এডিসি রেভিনিউ এবং তার স্টাফরা তারা দিনরাত পরিশ্রম করছে।’
ভারতের ত্রিপুরা থেকে মনু ও ধলাই নদী প্রবাহিত হয়ে মিলিত হয়েছে মৌলভীবাজারের কুশিয়ারা নদীতে। বর্ষাকালে উজানের পাহাড়ি ঢল ও অবিরাম বৃষ্টিতে নদীর পানি বেড়ে যায় কয়েকগুণ। মনু নদীতে প্রায় ২৭টি ও ধলাই নদীতে প্রায় ১৫টি স্থান রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকিপূর্ণ স্থান মেরামতে দ্রুত উদ্যোগ নেয়ার দাবি স্থানীয়দের।