যশোরের সাতমাইল, নোঙরপুর, তীরের হাট, আব্দুল্লাহপুর, ঝিকরগাছাসহ বেশ কয়েকটি এলাকার মাঠজুড়ে পটলের ক্ষেত। নিড়ানি, আগাছা পরিষ্কার, মাচা তৈরিসহ নানা পরিচর্যায় পটল ক্ষেতে ব্যস্ত কৃষক।
পটল চাষে জেলায় প্রতিবছর, শত কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়। চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পটলের ভালো ফলন হয়েছে। এছাড়াও বাজারে ভাল দাম পেয়ে খুশি কৃষক। তারা জানান, পটল চাষে কাঁচা পয়সা পাওয়া সম্ভব। এজন্য পটল চাষের দিকে ঝুঁকছেন বেশিরভাগ কৃষক।
যশোর সদর উপজেলার চুড়ামণকাটি গ্রামের আব্বাস আলী। দেড় বিঘা জমিতে করেছেন পটলের চাষ। আবাদে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হলেও বিক্রি শেষে ঘরে আসবে ২ লাখ টাকার বেশি। লাভের অংকটা জেরার অন্যান্য কৃষকদেরও একই রকম।
পটল চাষি আব্বাস আলীম জানান, সপ্তাহে একদিন ক্ষেত থেকে তুলতে পারেন পটল। কোন সপ্তাহে দাম কম হয়, কোন সপ্তাহে দাম বেশি হয়। পটল চাষের ফলে অন্যান্য চাষের খরচেও সাহায্য হয়।
আরেকজন পটল চাষি জানান, চাষের ক্ষেত্রে তার খরচ হয়েছে ১৭ হাজারের মত। তবে তিনি আশা করছেন বিক্রি হবে ৩০ হাজার টাকার মতো।
পটল চাষে স্বল্প পরিশ্রম আর অল্প কীটনাশক ও সারের ব্যবহারে ভালো ফলন পাওয়া সম্ভব। এছাড়া বছরের বেশিরভাগ সময় পটলের উৎপাদন অব্যাহত থাকে। তাই দিন দিন পটল চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যা পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।
ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের বিভিন্ন জায়গায় পটলের সরবরাহ হয়ে থাকে এখান থেকে। মাসে ৪ বার তোলা যায়। অর্থাৎ এই ১ মাসে যেকোনো একবার দাম বেশি পাওয়া যায়। তবে বেশিরভাগ সময়ই দাম বেশি পাওয়া যায়, মাঝে মাঝে কম থাকে।
কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, পটল ক্ষেত রোগবালাই মুক্ত রাখতে চাষিদের আধুনিক সেক্স ফেরোমেন ট্র্যাপ, জৈব বালাইনাশক সার ব্যবহারের নানা পরামর্শ ও সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক সমরেন বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা তাদের পরামর্শ দিয়ে তাদের পাশে থাকছি। গত অর্থবছরে যশোর এলাকায় আমরা পটলের আবাদ অর্জন করেছিলাম ১৮শ ৩২ হেক্টরের মতো। সেখানে আমরা প্রায় ২৮ হাজার ৩৯৬ মেট্রিক টন পটল উৎপাদন করতে পেরেছি। এ বছর আমাদের উৎপাদন বেড়েছে।’