বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা। হাটহাজারীর মেখলে এমন দিনে দুপুরে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে ঢুকে পড়ে চার যুবক, সবার মুখ মুখোশে ঢাকা। একটু পরই বাড়ি লক্ষ্য করে ফিল্মি কায়দায় গুলি ছুড়তে থাকে একজন। এরপর দফায় দফায় গুলিবর্ষণ।
কিছুক্ষণ পরই ব্যাগে অস্ত্র ঢুকিয়ে দৌড়ে পালায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এলোপাতাড়ি গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় বারান্দার গ্লাস। গুলির আঘাতে উঠে যায় দেয়ালের পলেস্তার। একটি গুলি জানালার গ্লাস ভেদ করে ঢুকে পড়ে ঘরের ভেতরেও।
বাড়িটি স্থানীয় ব্যবসারী জাহাঙ্গীরের, আবাসন, পেট্রলপাম্পসহ নানা রকম ব্যবসা তার। তিনি জানান, কয়েকদিন ধরে বিদেশি নম্বর থেকে তার কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে একটি গ্রুপ। মোবাইলে হুমকি দেয়ার পরও চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় হামলা চালায় তারা, এতে আতঙ্কিত পরিবারের সদস্যরা।
জাহাঙ্গীরের ভাই জানান, ৫ থেকে ৬ জন লোক আসে। তাদের মধ্যে ৪ জন বাসার ভেতরে ঢুকেছিল। কে বা কারা করেছে, তা জানা না গেলেও প্রশাসন যথেষ্ট সহযোগিতা করছেন বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
প্রকাশ্য দিবালোকে এমন ঘটনা আতঙ্ক ছড়িয়েছে পুরো এলাকায়, প্রশ্ন উঠেছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও। গত কয়েকমাস ধরে চট্টগামের হাটহাজারী, অক্সিজেন, বায়েজিদ, রাউজান মোহরাসহ বিশাল এলাকাজুড়ে চাঁদা দাবি, আধিপত্য বিস্তারে প্রায় অর্ধশত গোলাগুলিসহ প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৫ জন।
এমন জনবহুল এলাকায় এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আগে হয়নি, দাবি স্থানীয়দের।
স্থানীয়রা জানান, গ্রামের প্রতিটি পরিবার আতঙ্কিত। এরকম ঘটনা এ এলাকায় আগে দেখেননি বলেও দাবি অনেকের।
ঘটনার পরপরই এলাকায় আসে পুলিশ। শিগগিরই অস্ত্রধারীদের শনাক্ত ও আইনের আওতায় আনার আশ্বাস তাদের।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের মুখপাত্র মো. রাসেল বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ওখান থেকে সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেছে এবং তাদের শনাক্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী আমাদের বিভিন্ন ইউনিট কাজ করছে।’
৫ আগস্টের পর চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ, হাটহাজারি, রাউজান থানায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সবচেয়ে বেশি অবনতি হয়েছে। অথচ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জোরালো পদক্ষেপ নজরে আসেনি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।