পুরান ঢাকার লালবাগের পোস্তার আড়তগুলো কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য দেশের অন্যতম বড় জায়গা।
ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনেও সকাল থেকে এখানে ট্রাক,ভ্যান,রিকশা করে মৌসুমি ব্যবসায়ী ও মাদ্রাসার কর্মকর্তারা চামড়া নিয়ে আসছেন। চামড়া প্রক্রিয়াজাত শিল্পে রাজধানীর লালবাগের এমন কর্মযজ্ঞ বেশ পুরনো।
ডেমরা থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ী,ফড়িয়া হাজী সালাউদ্দিন তিন শতাধিক চামড়া নিয়ে এসেছেন,যার দর ঠিক না করতে পেরে দিশেহারা তিনি। কান্না জড়িত কন্ঠে জানালেন চামড়া আড়তে নামাতে শ্রমিক পাচ্ছেন না,চামড়াও পঁচে যাচ্ছে।
গত ২৬ মে চামড়ার দর নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম ৫ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ৬০-৬৫ টাকা। ঢাকায় সর্বনিম্ন কাঁচা চামড়ার দাম ১ হাজার ৩৫০ টাকা বেধে দেয় সরকার। কিন্তু পোস্তায় তো ভিন্ন চিত্র !
সরকারিভাবে কাঁচা চামড়ার দাম আগের বছরের তুলনায় বাড়লেও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রত্যাশা অনুযায়ী দাম পাচ্ছেন না তারা। বিপাকে পড়েছেন, আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে তারা।
আড়তদারদের দাবি, লবণের দর, শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি ও অন্যান্য খরচ বেড়ে যাওয়ায় সরকারের নির্ধারিত দরের চেয়ে কিছুটা কমে কাঁচা চামড়া কিনছেন তারা।
কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের সংগঠন হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, গতবারের তুলনায় এবার ১৫-২০ শতাংশ কম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা তাদের।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান জানান,মৌসুমি ব্যবসায়ীরা না বুঝে বেশি দামে চামড়া কিনে নিয়ে আসছেন।
এবারও ছাগলের চামড়া অবিক্রিত রয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যানুসারে, এ বছর কোরবানির পশুর চাহিদা ছিল প্রায় ১ কোটি ৩ লাখ ৮০ হাজার। সেখানে গরু-ছাগলসহ কোরবানির জন্য প্রস্তুত ছিল প্রায় ১ কোটি ২৪ লাখের বেশি। বছরে রপ্তানি হওয়া চামড়ার ৫০ থেকে ৬০ শতাংশের যোগান আসে ঈদুল আজহায়। সে হিসেব মাথায় রেখে এ বছর ৮০ থেকে ৮৫ লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে ট্যানারি মালিকরা।