ব্রিটিশ শাসনামল থেকেই সিরাজগঞ্জের সঙ্গে দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের জেলার রেল যোগাযোগ থাকলেও বগুড়া পর্যন্ত ছিল না সরাসরি ট্রেন যোগাযোগ। এতে বগুড়ায় রেল ভ্রমণে ঈশ্বরদী-শান্তাহার হয়ে বাড়তি পথ ঘুরতে হতো।
সিরাজগঞ্জবাসীর দাবি ও গুরুত্ব বিবেচনায় ২০১৮ সালে বগুড়া-সিরাজগঞ্জ ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। নতুন রেলপথের জন্য সিরাজগঞ্জ ও বগুড়া জেলায় ৯৬০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করতে হচ্ছে।
সম্প্রতি এ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের কাজ এগিয়ে নিতে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এতে আশার আলো দেখছেন সিরাজগঞ্জবাসী। তবে প্রকল্পটি ঘিরে সম্ভাবনার দ্বার খুললেও ভারতের সঙ্গে ঋণ চুক্তি না হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে তা বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কায় সিরাজগঞ্জবাসী।
সিরাজগঞ্জবাসী জানান, অর্থায়ন কে করবে তা নিয়ে এখনও রয়েছে শঙ্কা। এ ব্যাপারে নিশ্চয়তা চান তারা। এ প্রকল্পটি এ অঞ্চল এবং দেশের মানুষের জন্য একটি আশীর্বাদসরূপ বলেও মনে করছেন অনেকে।
৮৫ কিলোমিটার এ রেলপথ ঘিরে ৯টি নতুন স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে বগুড়া অংশে চারটি ও সিরাজগঞ্জ অংশে হবে পাঁচটি স্টেশন। আর সিরাজগঞ্জ সদরে নির্মাণ করা হবে জাংশন। তবে কৌশলগত কারণে সিরাজগঞ্জের জংশনটি শহরের রায়পুরে করার দাবি ব্যবসায়ীদের।
সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ প্রেসিডেন্ট সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, ‘জাংশনটা যেন রায়পুর স্টেশনে হয়, এখানে হলে আমরা অনেক উপকৃত হবো, বিশেষ করে শহরবাসী।’
রেলওয়ে থেকে অর্থছাড়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক জানান, খুব শিগগিরই শুরু হবে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কাজ।
সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এরই মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে আমরা ৯৬০ কোটি টাকা পেয়েছি। আমরা আগামী মাসেই তাদের ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়ে দিতে পারবো।’
প্রকল্প পরিচালক জানান, ভারত এতে অর্থায়ন না করলে বিকল্প উৎস খোঁজার প্রক্রিয়া চলছে।
বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেল প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম ফিরোজী বলেন, ‘অর্থায়ন সংক্রান্ত একটা জটিলতা ছিল। তবে আমরা খুব শিগগিরই ফাইনান্স নিয়ে কাজ শুরু করবো।’
২০১৮ সালে অনুমোদন পাওয়া এই প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহনের অর্থ ছাড় পেতেই সময় লেগেছে প্রায় ৭ বছর। তবে প্রকল্পের অর্থ সহায়তাকারী দেশ ভারত অর্থ ছাড় না দেয়ায় নতুন করে কোনো দেশের সাথে চুক্তি হয়নি এখনও।
প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হলেও সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প ৭ বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকায়। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে হাঁটবে কি না এই শঙ্কা সিরাজগঞ্জবাসীর।