স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে বোঝাপড়া বাড়ানোয় জোর চবি প্রশাসনের

চট্টগ্রাম
স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের চিত্র
এখন জনপদে , ক্যাম্পাস
শিক্ষা
0

সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ভয়াবহ সংঘর্ষ হলেও স্থানীয়দের সঙ্গে এ বিরোধ নতুন কিছু নয়। গত এক বছরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ হয়েছে অন্তত তিনবার। শিক্ষার্থীদের দাবি, আবাসন ও ক্যান্টিন সুবিধা বৃদ্ধি, যাতায়াতে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করলে কমে আসবে এরকম সংঘর্ষের ঘটনা। তবে আপাতত স্থানীয়দের সঙ্গে বোঝাপড়া বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

দীর্ঘ ৬ দশক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। বিশেষ করে তীব্র আবাসন সংকট থাকায় পার্শ্ববর্তী জোবরা গ্রামের বিভিন্ন কটেজ ও মেসে বসবাস করতে হয় শত শত শিক্ষার্থীদের। তাদের ওপর নির্ভর করেই এখানে গতি পায় স্থানীয় অর্থনীতি। দোকানপাট ও বিভিন্ন ব্যবসা চালিয়ে জীবন-জীবিকার খোরাক মেটান স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর নির্ভর করে স্থানীয়দের প্রায় ৫০০ পরিবারের জীবিকা। ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় তাই স্থানীয়রা পড়েছেন ভোগান্তিতে।

রোববারের (৩১ আগস্ট) সংঘর্ষের সূত্রপাতও জোবরা গ্রামে। এক শিক্ষার্থীর রাত করে মেসে ফেরা নিয়ে প্রথমে দারোয়ানের সঙ্গে হাতাহাতি, পরে হামলা-পালটা হামলায় তুচ্ছ ঘটনা রূপ নেয় রণক্ষেত্রে।

তবে এমন ঘটনা নতুন কিছু নয়। আগস্ট মাসের শুরুতে দোকানে স্থানীয়দের চাঁদা দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত হয় ক্যাম্পাস। দোকান দখলে নেয়া নিয়ে আরেকটি সংঘর্ষ হয় গত বছরের অক্টোবরে। এছাড়া অটোরিকশাচালকদের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটি আর স্থানীয়দের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয় প্রতিনিয়ত।

স্থানীয়রা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় তাদের পরিবারের মতোই এবং উভয় পক্ষই একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। তাই উভয় পক্ষ আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে সমাধান করা উচিৎ বলে মনে করছেন তারা।

আরও পড়ুন:

শিক্ষার্থীরা বলছেন, পূর্ণ আবাসন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে ক্যান্টিন ও সুপার শপের মতো সুবিধা বাড়ানো গেলে গ্রামবাসীর সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনা অনেকাংশে কমে আসবে।

তাছাড়া যাতায়াত ব্যবস্থায় আধুনিক ও বড় যানবাহনের ব্যবস্থা, ক্যাম্পাসে শক্তিশালী নিরাপত্তা বাহিনী গড়ে তোলার বিষয়গুলো পার্শ্ববর্তী গ্রামের ওপর তাদের নির্ভরতা কমাবে বলেও জানান তারা।

শিক্ষার্থীরা জানান, প্রশাসন আবাসন সুবিধা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের থাকতে হয় বাইরে। তাই এ ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়।

এছাড়া বিভিন্ন ধরনের সিন্ডিকেটের কথা উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা জানান, প্রশাসন তাদের সঙ্গে লিয়াজু করে চলে। সেই সিন্ডিকেটগুলোর অনিয়মের ক্ষোভ স্থানীয়রা শিক্ষার্থীদের ওপর প্রকাশ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংকট নিয়ে প্রশাসন দীর্ঘমেয়াদে ভাবলেও আপাতত স্থানীয়দের সঙ্গে বোঝাপড়া ও সমন্বয়ের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপ-উপাচার্য।

চবি উপ-উপাচার্য বলেন, ‘যারা সহিংসতায় অংশ নিয়েছে, বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বা সরকারকে ভিন্নভাবে প্রভাবিত করেত চেষ্টা করেছে কি না সেটি আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে। যারা এটা করেছে,  সেখানে দল-মত কোনোকিছুই বিচার করার সুযোগ নেই। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে স্থানীয়দের একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছি।’

এসএইচ