জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদনে ৭ লাখ কোটি ডলার অর্থ সহায়তা!

বিদেশে এখন
পরিবেশ ও জলবায়ু
0

যুদ্ধ, মহামারি, অর্থনৈতিক সংকট এই সবকিছুকে ছাপিয়ে বর্তমান পৃথিবীর অন্যতম সংকট জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। কার্বন নিঃসরণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে এই সংকট আরও তীব্র হতে পারে। অথচ এসবের তোয়াক্কা না করেই ২০১৬ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রায় ৭ লাখ কোটি ডলার অর্থ সহায়তা দিয়েছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকগুলো।

পৃথিবীর তাপমাত্রা যেভাবে বেড়ে চলছে তাতে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আরও বাড়বে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি।

২০১৫ সালে ফ্রান্সে জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন বা কোপ ২১-এ কার্বন নিঃসরণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে বিশ্বের ১৯৬টি দেশ। তবে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন বলছে, বহুল আলোচিত এই প্যারিস চুক্তির পর জীবাশ্ম জ্বালানী খাতে এখনো পর্যন্ত ৭ লাখ কোটি ডলার বরাদ্দ দিয়েছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকগুলো।

বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের জীবাশ্ম জ্বালানী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে অর্থ সহায়তা দিয়ে আসছে তালিকার শীর্ষে থাকা ৬০টি ব্যাংক। আর ইউরোপের জ্বালানি বাজারের হাল ধরেছে ব্রিটিশ বহুজাতিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান 'বার্কলেস'।

কার্বন নিঃসরণের মাত্রা নিয়ে বেশ কয়েকবার শিল্পোন্নত রাষ্ট্রগুলোকে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। তবে প্যারিস চুক্তি ও জাতিসংঘকে এক প্রকার বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে যাচ্ছে তেল, গ্যাস ও কয়লা নিয়ে কর্মরত বেশ কিছু বেসরকারি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান।

গার্ডিয়ানের গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৮ জন জলবায়ু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, গত দশ বছরে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়েছে ২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ।

অ্যামাজন বন সঙ্কুচিত হয়ে যাওয়া কিংবা মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাওয়ার পেছনে ৪ হাজার ২শ'র বেশি জীবাশ্ম জ্বালানী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে দায়ি করছেন বিজ্ঞানীরা। এসব প্রতিষ্ঠানে অর্থ বরাদ্দের তালিকার শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলো। শুধুমাত্র ২০২৩ সালে এই খাতে বরাদ্দকৃত ৭০ হাজার ৫শ' কোটি ডলারের ৩০ শতাংশই এসেছে মার্কিন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে। সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৮০ কোটি ডলার বরাদ্দ দিয়েছে জেপি মর্গান।

|undefined

জীবাশ্ম জ্বালানী উৎপাদনে বরাদ্দ। ছবি: এখন টিভি

এদিকে ইউরোপে জীবাশ্ম জ্বালানী উৎপাদনে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৪২০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে বার্কলেস। স্পেনের স্যান্টেনডার ও জার্মানির দোয়চা ব্যাংক আছে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে।

|undefined

ইউরোপে জীবাশ্ম জ্বালানী উৎপাদনে বরাদ্দ। ছবি: এখন টিভি

কার্বন নিঃসরণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে যত বেশি কালক্ষেপণ করা হবে, বাড়তে থাকবে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি। শিল্পোন্নত দেশগুলোর পাশাপাশি বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকগুলো একটি ঐক্যে পৌঁছাতে না পারলে আগামী প্রজন্মে জন্য পড়ে থাকবে বসবাসের অযোগ্য এক পৃথিবী।

সেজু