বৃষ্টির সঙ্গে বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ; জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে কার্যকর উদ্যোগ জরুরি

হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী
স্বাস্থ্য
0

বৃষ্টি বাড়ছে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বর আক্রান্তের হারও। ইতোমধ্যে ডেঙ্গুতে প্রাণ হারিয়েছেন শতাধিক। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, সামনের দিনগুলো হতে পারে আরও ভীতির। একইসঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মশক নিধনে কার্যকর উদ্যোগ নেবার আহ্বান তাদের।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নানা সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, নদীভাঙন, খরা, উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততা বৃদ্ধির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের হানায় পড়ছে দেশ। যার প্রভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকিসহ বাড়ছে মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব।

সবচেয়ে ভয়াবহ এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গু জ্বর। এ রোগে কমবেশি সারাবছরই ঘটছে প্রাণহানি। সাধারণত মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুর মৌসুম ধরা হলেও বর্তমানে বছরজুড়ে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। আগে শুধু রাজধানী ঢাকা কেন্দ্রিক হলেও বর্তমানে দেশের সবজেলাতে ছড়িয়ে পড়েছে এডিস মশা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গু জ্বরের এমন লাগামহীন সংক্রমণের পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের দায় রয়েছে।

কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বেই এডিস মশা বাহিত রোগ ও বাহক বাহিত রোগ বেড়ে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবথেকে বেশি প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশে।’

এবছরও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের গ্রাফ উর্ধ্বমুখী। আগস্টের প্রথম ১২ দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন চার হাজারের বেশি রোগী। মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের। তবে কীটতত্ত্ববিদদের দাবি, ডেঙ্গুর পাশাপাশি মশাবাহিত আরেক রোগ চিকুনগুনিয়াও বাড়ছে।

আরও পড়ুন:

কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, ‘একজন রোগী যখন জ্বর নিয়ে আসে তখন তাকে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু চিকুনগুনিয়ার তেমন পরীক্ষা করা হয় না। কারণ হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে কীট নেই। ডেঙ্গু জ্বরের কীটের পাশাপাশি চিকুরগুনিয়ার কীটগুলোও সহজলভ্য হওয়া দরকার।’

অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর জ্বরে বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। যারা জ্বর নিয়ে হাসপাতালে আসছেন তাদের ডেঙ্গুর পাশাপাশি চিকুনগুনিয়া বা অন্যান্য পরীক্ষা, নিরীক্ষা করার কথা জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতাল জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. লিপি সুলতানা বলেন, ‘আমরা পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ডেঙ্গু জ্বরের টেস্ট করতে পারছি। তবে চিকুনগুনিয়া এভাবে টেস্ট করতে পারছি না। পাশাপাশি চিকুনগুনিয়ার জন্য এমন জটিলতাও সৃষ্টি হচ্ছে না।’

যেহেতু এবার বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পরিমাণ বেশি তাই নগরবাসীকে অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ চিকিৎসকদের। একইসঙ্গে শিশুদের জ্বর হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবার আহ্বান স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টদের।


এফএস