পার্বত্য অঞ্চলের জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান দেশের সবচেয়ে ম্যালেরিয়াপ্রবণ এলাকা। দেশে মোট ৩৬ প্রজাতির এনোফিলিস মশা দেখা গেলেও এদের মধ্যে কেবল ম্যালেরিয়া ছড়ায় সাত প্রজাতিই।
পার্বত্য এ অঞ্চলে প্রতিবছর এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়ে। বিশেষ করে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে রাঙামাটির সীমান্তবর্তী জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, বরকল ও বাঘাইছড়ি উপজেলায় ম্যালেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে বেশি। তবে অসচেতনতা, দুর্গম আর স্বাস্থ্য বিভাগের জনবল সংকটে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না ম্যালেরিয়া।
জেলা সিভিল সার্জন জানায়, গেল জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে রাঙামাটির ১০ উপজেলায় ম্যালেরিয়ার রোগী শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৪২৬ জন । যার মধ্যে জুনে সর্বাধিক ৯৮৬ ও জুলাইয়ে ৭৬৪ জন আক্রান্ত হন। এদের মধ্যে গেলো ২০ ফেব্রুয়ারি চমেক হাসপাতালে মারা যায় বিলাইছড়ির ফারুয়ার বাসিন্দা সাড়ে চার বছরের প্রত্যাশা তঞ্চঙ্গা। আর ১২ জুলাই সদর হাসপাতালে মৃত্যু হয় রাঙামাটির বন্দুকভাঙার বাসিন্দা দশ বছরের সুদীপ্তা চাকমা।

ম্যালেরিয়াপ্রবণ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারি বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগের পাশাপাশি সচেতনতা বাড়ানোর তাগিদ চিকিৎসকের।
আরও পড়ুন:
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শওকত আকবর খান বলেন, ‘সরকার এবং বেসরকারি যে এনজিও আছে আমরা সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এলাকার জনগোষ্ঠীকে আগে সচেতন করতে হবে। নিয়মিত মশারি ব্যবহার করা, মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করা এসব বিষয়ে সচেতন করতে হবে তাদের।’
গত বছরের চেয়ে এবার ম্যালেরিয়ার আক্রান্তের সংখ্যা কমাতে মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রমে সজাগ দৃষ্টি রাখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়ার কথা জানান জেলা সিভিল সার্জন।
রাঙামাটি সিভিল সার্জন ডা. নূয়েন খীসা বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর ম্যালেরিয়ার সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। এজন্য আমাদের মাঠ পর্যায়ের কাজ চলমান আছে। ম্যালেরিয়ার সন্দেহ হলে পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে। তাদের সচেতন করতে বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান। এসময় ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে ব্রাকের মাধ্যমে কীটনাশকযুক্ত মশারি বিতরণ করা হয়েছে ১৫ লাখ ৬০ হাজার ৯৬৫টি।’