ব্রিটেনের রাজনীতিতে এই মুহূর্তে সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু অভিবাসন নীতি। জনমত ও বিরোধীদের অব্যাহত চাপের মুখে অবশেষে অভিবাসন ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ক্ষমতাসীন লেবার সরকার।
এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ঘোষণা করেছেন নতুন ভিসা ও অভিবাসন নীতি। নতুন নীতির আওতায়, স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পেতে যুক্তরাজ্যে অভিবাসীদের কমপক্ষে ১০ বছর অপেক্ষা করতে হবে।
ফলে, আগের নিয়ম অনুযায়ী পাঁচ বছরের পর স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পাওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সরকারের নতুন ঘোষণায় প্রবাসী কমিউনিটিতে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ আর অনিশ্চয়তা।
সরকার ঘোষিত নিয়মে আইএলআরের সময়সীমা কবে থেকে এবং কাদের জন্য প্রযোজ্য হবে তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের কাছে।
ওয়ার্ক পারমিট ক্লাউডের এমডি ব্যারিস্টার লুৎফুর রহমান বলেন, ‘ইকুয়েশন থেকে যারা চলে এসেছেন তারাও কি ১০ বছর রুটে পড়বে কি না? সাধারণ আমাদের অভিজ্ঞতা বলে যারা যে রুটে আসছেন, জেনে আসছেন ওইটাই থাকে। যদি সরকার এটা পরিবর্তন করে তাহলে অবশ্যই হাইকোর্টে আবেদন করা যাবে।’
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ব্রিটেনে ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত অভিবাসীর সংখ্যা ৯ লাখ ছাড়িয়েছে। এতে বেশ বিপাকে পড়ে সরকার।
এছাড়াও, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অভিবাসন ইস্যুতে বার বার ব্যর্থতায় জনরোষে পড়ে আরও বেশকিছু পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে লেবার সরকার। যার মধ্যে অন্যতম কেয়ার হোমগুলোকে বিদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের অনুমতি না দেয়ার পাশাপাশি স্থানীয় ও যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত কেয়ারকর্মীদের কাজ প্রদানে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা। এছাড়াও, ইংরেজি ভাষার দক্ষতা নিয়ে কড়াকড়ি আরোপের ঘোষণা দিয়েছে।
ব্যারিস্টার লুৎফুর রহমান বলেন, ‘নতুন যে নিয়ম আসছে সেখানে স্পিকিং, রিডিং রাইটিংয়ে ৫.৫ পেতে হবে। প্রত্যেকটাই ৫.৫, এটাকে বিটু ইংরেজি বলে। যারা এদেশে পড়তে এসেছে তাদের এ ইংরেজি লাগবে। এখন আপনি যেকোনো স্কিল ওয়ার্কার হিসেবেই আসুন না কেন এটা লাগবে।’
গেল পহেলা মে অনুষ্ঠিত যুক্তরাজ্যের স্থানীয় নির্বাচন ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির ভীত নাড়িয়ে দেয়। যেখানে নাইজেল ফারাজের রিফর্ম ইউকে ১ হাজার ৬৪১ টি আসনের মধ্যে ৬৭০টির বেশি স্থানীয় কাউন্সিল আসন এবং প্রথমবারের মতো দুটি মেয়র পদ পায়। বিপরীতে লেবার পার্টি পেয়েছে মাত্র ৯৮ টি আসন।
অথচ মাত্র ১০ মাস আগে জাতীয় নির্বাচনে ৬৫০ আসনের লড়াইয়ে ৪১২টি আসনে ভূমিধ্বস জয় নিয়ে ক্ষমতার মসনদে বসে লেবার পার্টি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন জনপ্রিয়তা বাড়াতেই অভিবাসন ইস্যুতে সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপ।