লিবিয়ায় অপহৃত হওয়া তিন বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে

অপহৃত হওয়া তিন বাংলাদেশি
দেশে এখন
প্রবাস
0

দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার সহায়তায় লিবিয়ায় অপহৃত হওয়া তিন ভুক্তভোগীকে দেশে ফেরত আনা হয়েছে। দেশে ফিরে অমানবিক নির্যাতনের বর্ণনা দেন ভুক্তভোগীরা। এদিকে, মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে আলাদা দুটি মামলায় রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। এই চক্রের অন্যান্য সদস্যকে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলমান বলেও জানায় পুলিশ।

ভিনদেশি মুদ্রায় উন্নত জীবনের আশায় প্রবাস জীবন বেছে নেন অনেক বাংলাদেশি। দেশের মায়া ত্যাগ করে যারা পাড়ি দেন বিদেশ-বিভুঁইয়ে তাদের অনেকেরই স্বপ্নযাত্রা থমকে যায় দালাল চক্রের ফাঁদে পড়ে।

ঝিনাইদহের মতিউর রহমান, কুষ্টিয়ার তানজির শেখ আর নোয়াখালীর আলমগীর হোসেনের জীবনেও নেমে এসেছিল প্রতারক চক্রের কালো থাবা।

মাফিয়াচক্রের হাতে লিবিয়ায় কর্মস্থল থেকে অপহরণ হন অজ্ঞাত স্থানে। ৪২ দিন আটকে রেখে তাদের ওপর চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। দাবি করা হয় ২২ লাখ টাকা মুক্তিপণ।

পরে চার লাখ টাকার বিনিময়ে পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে ব্র্যাক, আইওএমসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার চেষ্টায় বুধবার দেশে ফিরিয়ে আনা হয় তাদের।

ভিকটিম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের অপহরণ করে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয় পরিবার থেকে। পরিবার থেকে টাকা ম্যানেজ করতে না পারায় প্রতিদিন আমাদের ওপর নির্যাতন চলতো। আমাদের খাবার খেতে দিতো না। কখনো মুখ, হাত, পা বেঁধে কয়েকজন মিলে মারধর করতো।’

এদিকে, মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে ঢাকায় আলাদা দুটি মামলার অভিযানে নামে পিবিআই। রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে দালাল চক্রের দুই সদস্যকে।

সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই জানায়, অভিযানে মুক্তিপণের লেনদেনের কাগজ, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ভিডিও কলে রেকর্ড ও নির্যাতনের ভিডিও জব্দ করা হয়।

পিবিআই এর অতিরিক্ত উপ পুলিশ পরিদর্শক এনায়েত হোসেন মান্নান বলেন, ‘ভিকটিম পরিবার অনেক জায়গায় চেষ্টা করেছে। আমরা মামলার জনগুরুত্ব বিবেচনা করে আদাবর থানায় মামলা দেয়ার ব্যাপারে সহায়তা করি। এবং স্বপ্রণোদিত হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে এ মামলাটা আমরা পিবিআই নর্থ অধিগ্রহণ করেছি।’

তিনি বলেন, ‘রাসেল হক নামে একজনকে আমরা বোয়ালিয়া থেকে গ্রেপ্তার করি। রাসেল হকের দেয়া তথ্যমতে আমরা বেশ কিছু তথ্য পাই যে তার আত্মীয় স্বজন যারা লিবিয়াতে রয়েছেন এবং এ চক্রের সাথে জড়িত।’

পারস্পারিক যোগসূত্রে যেসব চক্র প্রবাসীদের জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে বলে জানায় পুলিশ।

উপ পুলিশ পরিদর্শক এনায়েত হোসেন মান্নান বলেন, ‘শক্তিশালী ভাবে এ অভিযান আরও বেগবান করবো। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। এবং যারাই এর সাথে জড়িত থাকবে তাদের আমরা আইনের আওতায় আনবো।’

ইএ