আমিরাতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা

আল আইন শহরে বাংলাদেশি প্রবাসীদের দোকান
প্রবাস
0

সংযুক্ত আরব আমিরাতের সবুজ নগরী আল আইনের প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভূমিকা রাখছেন সেখানকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়। দেশটির অন্যান্য প্রদেশগুলোর মতো এখানেও সাধারণ শ্রমিক, ব্যবসায়ীসহ নানা পেশায় কাজ করছেন লাখো প্রবাসী বাংলাদেশি। কেউ কেউ থাকেন পরিবার পরিজন নিয়ে।

এক লাখেরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি বাস করেন আরব আমিরাতের সবুজ নগরী খ্যাত আল আইন প্রদেশে। পরিবার-পরিজন নিয়ে দশ হাজারের মতো প্রবাসী থাকেন সেখানে। এই শহরে ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিনিয়োগ করে ব্যবসা-বাণিজ্যেও জড়িয়েছেন অনেকেই।

এখানে বড় বিনিয়োগও আছে বাংলাদেশিদের। যার মধ্যে আবাসন খাত, নির্মাণ, ঠিকাদারি ও ওয়ার্কশপের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোই বেশি। এছাড়াও গ্যারেজ ও সাধারণ শ্রমিক নির্ভর প্রতিষ্ঠানগুলোতেও কমবেশি অংশগ্রহণ আছে বাংলাদেশিদের। মালিক হয়েছেন হোটেল-রেস্তোরাঁসহ নানা ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের।

আল আইনের গ্রিন সিটি জেনারেল কন্ট্রাক্টিং ব্যবস্থাপক মাহাবুবুর রহমান টিটো বলেন, ‘বাংলাদেশিদের প্রধান সমস্যা ভিসার সমস্যা। কিছুদিন আমাদের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এখানে এসেছিলেন। এবং একটা মেসেজ উনি এখান থেকে পেয়ে গেছেন। এটা আমাদের জন্য খুব অ্যালার্মিং।’

আল আইনের ওয়াদি আল মিসক মেইনটেন্যান্স কোম্পানির জেনারেল আতাউর রহমান আতা বলেন, ‘এখানে আমাদের বেশিরভাগই বাংলাদেশিদের দখলে। তারপর ওয়ার্কশপ যেগুলো ওয়েল্ডিং এর কাজ করে এ ওয়ার্কশপের কাজগুলো অনেক বাংলাদেশি প্রবাসীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’

প্রবাসীরা জানান, প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাহিদা থাকলেও ভিসা জটিলতার কারণে নতুন করে দেশীয় শ্রমিক বাড়াতে পারছে না এসব প্রতিষ্ঠান।

আল আইন ন্যাশনাল পেইন্টসের হিসাব রক্ষক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘কনট্রাক্টররা অনেক বিপদে আছে কারণ নতুন কর্মী নিয়োগ দিতে পারছে না, কোন লেবার নিয়োগ দিতে পারছে না, নতুন করে ভিসা প্রসেস করতে পারছে না। এমনকি কোন লাইসেন্স ও বানাতে পারছে না।’

ব্যবসা-বাণিজ্য ছাড়াও এই শহরে বসবাস করা বাংলাদেশিদের বিনোদন ও দেশীয় সাংস্কৃতিক চর্চার সুযোগ এনে দিতে কাজ করছে বাংলাদেশ কমিউনিটি। শিল্প-সাহিত্য ও মৌসুমি নানা আয়োজনে সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করতে চায় তারা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশীয় নানা আয়োজনের মাধ্যমে বাংলা সংস্কৃতির পরিসর বাড়াতে কাজ করবে এই কমিউনিটি।

আল আইনের কমিউনিটি নেতা শওকত ওসমান রানা বলেন, ‘আমরা মাঝে মাঝে তাদের জন্য প্রোগ্রাম করি। এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে তাদের মননে এটা ঢুকিয়ে দিতে চাই যে এভাবে বাংলাদেশি সংস্কৃতিকে ধারণ করে তারা সামনের দিনে এগিয়ে যেতে পারবে।’

আল আইন বাংলাদেশ সমিতির আজীবন সদস্য মোহাম্মদ জাহেদুল আলম বলেন, ‘বৈশাখী উৎসব আছে, পিঠা উৎসব আছে। এছাড়া বাংলাদেশি কোনো পণ্যের ব্র্যান্ডিং যদি কেউ করতে চায় তাহলে এখানকার মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের অনুমতি নেয়া আছে।’

সবুজে ঘেরা এই নগরী আমিরাতের অন্য প্রদেশগুলো থেকে ব্যতিক্রম। ওমানের পার্শ্ববর্তী এই শহরে ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রসার ঘটিয়ে নিজেদের সমৃদ্ধ করছেন বাংলাদেশিরা। অবসরের বিনোদন পেতে দেশীয় সংস্কৃতির সঙ্গে মেলবন্ধন তৈরির কাজও করছেন তারা।

ইএ