চাকরি হারানোর ভয়কে সঙ্গী করে দিন পার করছেন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল এশিয়ার বিভিন্ন দেশের লাখ লাখ পোশাক শ্রমিক। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য পোশাক তৈরি করে এমন শাস্তির মুখোমুখি তারা। এ তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে কম্বোডিয়া এবং শ্রীলঙ্কা। বিবিসির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১ আগস্ট থেকে কম্বোডিয়ার পণ্য ৩৬ শতাংশ এবং শ্রীলঙ্কার পণ্য ৩০ শতাংশ শুল্কের মুখোমুখি হবে। যার কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পোশাকের ক্রয়াদেশও কমার শঙ্কায় দেশগুলোর উৎপাদকরা। অথচ নাইকি, লেভিস এবং লুলুলেমনের মতো মার্কিন ব্র্যান্ডগুলোর পোশাক তৈরি হতো দেশগুলোতে। অতিরিক্ত শুল্কের মুখোমুখি হওয়া দিন থেকে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঝুঁকিতে রয়েছে।
শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিবিদ ধননাথ ফার্নান্দো বলেন, ‘মার্কিন বাজার থেকে চাহিদা কমবে। এতে সামগ্রিকভাবে প্রভাব ফেলবে। শ্রীলঙ্কার পোশাক যেহেতু মার্কিন বাজারকে লক্ষ্য করে তৈরি, তাই এই খাতটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্য বলছে, গত বছর তিন বিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের পোশাক রপ্তানি করেছে কম্বোডিয়া। আর দেশটির এই খাতে কাজ করে নয় লাখের বেশি মানুষ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানির ওপর নির্ভর করে শ্রীলঙ্কায় কর্মসংস্থান হয়েছে সাড়ে তিন লাখের ওপরে। এছাড়া ওয়াশিংটনে পোশাক রপ্তানি করে গত বছর কলম্বোর আয় ছিলো এক দশমিক নয় বিলিয়ন ডলার।
এদিকে ট্রাম্পের শুল্ক চাপের মুখে বাংলাদেশের পোশাক প্রস্তুতকারকরাও। আগামী মাস থেকে পূর্বের ১৫ শতাংশের সঙ্গে অতিরিক্ত ৩৫ শতাংশ মার্কিন শুল্ক যোগ হলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে ক্ষতির মুখোমুখি হবে ঢাকাও। যদিও শুল্ক চাপ কমাতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে যেমন পদক্ষেপ নিয়েছে, তেমনি চলছে আলোচনাও।
দেশ গার্মেন্টসের মালিক বিদ্যা অমৃত খান বলেন, ‘পোশাক কারখানার মালিকরা যদি ইউরোপীয় বাজারে অথবা নতুন বাজারে রপ্তানি করতে চান, তাহলে সময় লাগে। আমরা এর জন্য অন্তত ছয় মাস থেকে এক বছর সময় লাগবে বলে মনে করছি। এটা রাতারাতি করা সম্ভব না। অন্য বাজার ধরার চেষ্টা করতে গিয়ে হয়তো অনেক কারখানা বন্ধও হয়ে যাবে।’
চীনের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক বাংলাদেশ। পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশে পরে থাকা ভিয়েতনামের কাঁধেও অতিরিক্ত ২০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে রেখেছে ওয়াশিংটন।