এমন পরিস্থিতির মধ্যেই দেশের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে লড়াইরত আরাকান আর্মি বুধবার জানায়, মিয়ানমারের সেনা ও পুলিশ বাহিনীর প্রায় অর্ধশত সদস্যের আত্মসমর্পণ বা আটকের খবর। এদের মধ্যে ২৮ পুলিশ সদস্য অস্ত্র ও আত্মসমর্পণ করেছে আরাকান আর্মির কাছে এবং ১০ সেনা আটক হয়েছে। পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতিতে রাখাইনের প্রাদেশিক রাজধানী সিতওয়েতে কারফিউ জারি করেছে সেনাবাহিনী, শহরজুড়ে সামরিক ট্যাংকের টহল চলছে।
দাবির সত্যতা যাচাই করা না গেলেও বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, অক্টোবরের শেষ দিক থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তিনটি বিদ্রোহী আদিবাসী বাহিনীর সমন্বিত হামলায় নাকাল মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। 'অপারেশন ১০২৭' অভিযানে অংশ নেয়া অন্যতম বাহিনী আরাকান আর্মির।
গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করে ২০২১ সালে দেশের নেতৃত্বভার দখলের পর সবচেয়ে বড় পরীক্ষার মুখে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। জানা গেছে, চীন সীমান্তসহ দেশের বিভিন্ন শহর ও শতাধিক সামরিক নিরাপত্তা চৌকির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে সেনাবাহিনী। বিদ্রোহীদের নিরাপত্তা চৌকি দখলের খবর ভুয়া বলে দাবি করলেও জান্তা শাসকগোষ্ঠীর মুখপাত্র জ মিন তুন মঙ্গলবার অভিযোগ করেন, 'পুরো দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বিদ্রোহীরা'।
সরকারি বাহিনীর আত্মসমর্পণের বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও সেনা মুখপাত্র জ মিন তুনের তথ্য অনুযায়ী, শান, রাখাইন, কায়াহ প্রদেশে সংঘাত চলছে। অন্যদিকে, মিয়ানমারের উত্তরপশ্চিমের চিন প্রদেশেও বিচ্ছিন্নতাবাদী সহিংসতা চরমে উঠেছে বলে জানা গেছে। সেনাবাহিনীর ৪৩ জন সদস্য সীমান্তপথে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে প্রতিবেশী ভারতের মিজোরাম রাজ্যে।
রাজ্যটির পুলিশের মহাপরিদর্শক লালবিয়াকথাঙ্গা খিয়াঙ্তে বলেন, 'পালিয়ে আসা সবাইকে আসাম রাইফেলসের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। ভারত সরকার তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করবে। গেলো কয়েক মাসে সীমান্তের দুই গ্রাম জোখাওথার আর বুলফেকজাওলে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।'
উত্তরাঞ্চলে চলমান সহিংসতায় খণ্ডবিখণ্ড হয়ে যেতে পারে পুরো মিয়ানমার, চলতি সপ্তাহেই এমন শঙ্কা জানান খোদ সেনাবাহিনীর নিয়োগপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট মিন্ত সোয়ে।