চরম আবহাওয়ার মধ্যে লাভের মুখে ইরাকের লবণ শিল্প

বস্তায় ভরা হচ্ছে লবণ
বিদেশে এখন
0

চরম আবহাওয়ার মধ্যেই ইরাকের লবণ শিল্প লাভের মুখ দেখছে। বসরা শহরে উচ্চ তাপমাত্রাকে কাজে লাগিয়ে সমুদ্রের পানি থেকে উৎপাদিত হচ্ছে লবণ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে করে ক্ষতির মুখে পড়ছে উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্র।

তীব্র খরায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরাকে পানির মজুদ ৮০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। বর্ষা মৌসুমেও শুকনো ফোরাত ও দজলা নদী। সাড়ে ৪ কোটি জনসংখ্যার দেশটি জলবায়ু পরিবর্তনে এক ভয়াবহ পরিবেশগত সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে, এই তাপমাত্রা বৃদ্ধিকেই কাজে লাগাচ্ছে ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলের আল-ফাও শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত লবণ কারখানাগুলো। যেখানে সমুদ্রের পানি থেকে লবণ উৎপাদনে উপকারে আসছে উচ্চ তাপমাত্রা। এতে উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি বাড়ছে লবণের গুণগত মানও।

একজন জানান, বিশ্ব উষ্ণায়ন অনেকের জন্য ক্ষতিকর হলেও, লবণ শিল্পের জন্য বেশ উপকারী। পানি দ্রুত বাষ্পীভূত হওয়ায় বাড়ছে লবণ উৎপাদন।

ইরাকে সমুদ্রের পানি থেকে লবণ তৈরির একমাত্র ফ্যাক্টরি আল-ফাও শহরের বসরা লবণ কারখানা। প্রতি বছর কোম্পানিটি সাড়ে ৩ লাখ টন লবণ উৎপাদনে সক্ষম। সমুদ্রের পানি থেকে উৎপাদিত লবণ, কূপ বা হ্রদ থেকে উৎপাদিত শিলা লবণের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা।

ইরাকে বহুমুখী কাজে লবণ ব্যবহার করা হয়। তেল শিল্প, খাদ্যের মান বৃদ্ধি, পানি পরিশোধন ও ডিটারজেন্ট তৈরিতেও লবণের চাহিদা অনেক।

আরেক অধিবাসী জানান, আমাদের উৎপাদিত লবণের একটি বড় অংশ খনি থেকে তেল উত্তোলনে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও, পানি পরিশোধন ও ডিটারজেন্ট তৈরির কাঁচামাল হিসেবে লবণ ব্যবহার হয়।

সাধারণত খনির শিলা লবণ থেকে সমুদ্রের পানি থেকে লবণ উৎপাদন পরিবেশগতভাবে কিছুটা কম ক্ষতিকর। কারণ এর জন্য গভীর নিষ্কাশনের প্রয়োজন পড়ে না। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্কবার্তা দিয়েছেন, সমুদ্রের পানি থেকে বড় পরিসরে লবণ সংগ্রহ উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্রকে ব্যাহত করতে পারে।

বসরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষক মিশতাক ইদান বলেন, ‘বিশ্ব উষ্ণায়ন কিছু শিল্পের জন্য বেশ উপকারী। যেমন লবণ শিল্প, খেজুর চাষ ও কিছু ফসল যা উচ্চ তাপমাত্রার ওপর নির্ভরশীল। তবে কিছু সংখ্যক শিল্পের সুবিধার তুলনায় জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি অনেক বেশি। এর ফলে বাস্তুচ্যুত হচ্ছে প্রাণীকুল।’

জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি বলছে, উপকূলীয় পানি দূষণের অন্যতম কারণ হতে পারে লবণ তৈরির প্রক্রিয়া। যা সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যকেও হুমকির মুখে ফেলবে। বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনে জাতিসংঘের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় আছে ইরাক।

এএইচ