তুরস্কে অনুষ্ঠিত রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি সম্মেলন পেরিয়েছে ১৫ দিন। অথচ প্রতিশ্রুত যুদ্ধবিরতির খসড়া প্রস্তাব এখনো সরবরাহ করেনি মস্কো। এ নিয়ে বেজায় চটেছেন ভলোদিমির জেলেনস্কি। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের দাবি, পিস মেমোরেন্ডাম প্রদানের নামে আবারও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে রাশিয়া।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। অথচ দুই সপ্তাহ হয়ে গেলেও এখনো সেই যুদ্ধবিরতির খসড়া পাঠায়নি। এমনকি বৈঠকের আয়োজক তুরস্কও এই বিষয়ে কিছু পায়নি। তুরস্কের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র এমনকি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকেও রাশিয়া ধোঁকা দিয়েছে।’
তবে খসড়া চুক্তি সরবরাহের পরিবর্তে দ্বিতীয় দফা বৈঠকের বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে মস্কো। ক্রেমলিন মুখপাত্রের দাবি, আগামী দোসরা জুন ইস্তাম্বুলে বৈঠকের প্রস্তাব দেয়া হলেও এখনো জবাব দেয়নি কিয়েভ।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ বলেন, ‘আগামী সোমবার ইস্তাম্বুলে বৈঠকের জন্য রাশিয়া প্রস্তুাব পাঠিয়েছে। বৈঠকেই যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে আমাদের এখনো প্রতিপক্ষের কাছ থেকে প্রস্তাবের জবাব দেয়া হয়নি।’
যুদ্ধরত দুই দেশের মধ্যে আগামী সপ্তাহে সরাসরি সংলাপের বিষয়ে আশাবাদী যুক্তরাষ্ট্র। তবে ওয়াশিংটন ইস্তাম্বুলে কোনো প্রতিনিধি পাঠাবে কী না, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট রণক্ষেত্রের পরিবর্তে আলোচনার টেবিলে যুদ্ধ বন্ধ করতে চান। দুই নেতাকেই এ বিষয়ে তিনি জানিয়েছেন। আগামী সপ্তাহে বিষয়টির অগ্রগতি হবে। প্রতিনিধি পাঠানোর বিষয়টি চূড়ান্ত হলে জানানো হবে।’
যুদ্ধবিরতির জন্য ইউক্রেনের প্রস্তাব রাশিয়ার গ্রহণ করা উচিত। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এমনটাই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দাবি, ৩০ দিনের এই যুদ্ধবিরতির চেয়ে মস্কোর জন্য ভালো প্রস্তাব পাওয়া আর সম্ভব নয়।
জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জন কেলি বলেন, ‘রাশিয়া যদি যুদ্ধ অব্যাহত রাখার মতো ভুল সিদ্ধান্ত নেয়, সেক্ষেত্রে সংঘাত নিরসনে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে দাঁড়াবে। তবে বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র কিংবা মূল্যবোধ আমরা ছেড়ে যাবো না।’
এদিকে বৃহস্পতিবার দিনভর ইউক্রেন লক্ষ্য করে ৯০টির বেশি ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। যার মধ্যে ভূপাতিত করা হয়েছে অর্ধশতাধিক ড্রোন। এতে প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন ইউক্রেনীয়।