সংযুক্ত আরব আমিরাতের সবচেয়ে জনপ্রিয় শহর দুবাই। পারস্য উপসাগরের দক্ষিণ পূর্ব উপকূলীয় এই শহরে প্রতিবছর আসেন লাখ লাখ পর্যটক।
দুবাইয়ের অর্থনীতির অনেকাংশই নির্ভর করে পর্যটন খাতের ওপর। সব মৌসুমেই বিলাসবহুল এই শহরে পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। তবে এবারের গ্রীষ্ম মৌসুমে পর্যটকরা ঘুরতে এসে পড়েছেন চরম বিপাকে। বিশাল সমুদ্র সৈকত আর বাইরের পর্যটন কেন্দ্রগুলো জনশূন্য হতে শুরু করেছে। কারণ গ্রীষ্মের গরম এবার মাত্রা ছাড়িয়েছে।
এক পর্যটক বলেন, ‘হতাশ লাগছে, যখন বিমান থেকে নেমেছি তখন থেকেই। এতো গরম। কিন্তু প্রথমবার আসতে পেরে আমার মা খুশি।’
আরেকজন বলেন, ‘যখনই সুযোগ পাই, দুবাই চলে আসি। কিন্তু এবার তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পাচ্ছি। দ্রুতই যা আরও বাড়বে। ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসও হতে পারে। তাই শীতে আসলেই ভালো।’
সমুদ্র সৈকতের বালুচরের ছাতাগুলোর নিচে নেই কোনো মানুষ। তীব্র গরমে একরকম ফাঁকাই পড়ে আছে পুরো সৈকত। কিন্তু দুবাইয়ের মিরাকল গার্ডেনে আবার লোকে লোকারণ্য। কিন্তু শহরের ব্যস্ততম পর্যটন কেন্দ্র গ্লোবাল ভিলেজ বন্ধ গ্রীষ্ম মৌসুমের কারণে।
আরেক পর্যটক জানান, এখানে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। ফ্যান ছাড়া গলে যাচ্ছি। এভাবেই টিকে আছি। আমার খুবই খারাপ লাগছে। পার্কে একটু রেস্ট নিতে পারবো কিনা তাও জানি না।
অন্য একজন বলেন, ‘গ্লোবাল ভিলেজ দেখার ইচ্ছা ছিল। শুনেছি, এখানে অনেক সংস্কৃতি, সভ্যতা আর ঐতিহ্যের মেলবন্ধন দেখা যায়। এর পরের বার অবশ্যই দেখবো।’
সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে মে ও জুন মাসের তাপমাত্রা নিয়ে আগে থেকেই সতর্ক করা হয়েছিলো। বলা হয়েছিলো, বাসিন্দাদের ঘরেই থাকতে।
আমিরাতি আবহাওয়াবিদ সুলতান আল কাথিরি বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাত তীব্র গরমের দেশ। চারপাশ থেকে আসা নিম্নচাপে এই অঞ্চলে গরম আর আর্দ্রতা বেড়ে যায়। দক্ষিণের বাতাস, আরব সাগরের গরম বাতাস, সব মিলিয়ে এই দেশে গরম থাকবেই।’
জলবায়ু বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে গালফ অঞ্চলে তীব্র গরম এখন সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গেল ৪ দশকে বৈশ্বিক তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ায় এই অঞ্চল আরও উষ্ণ হয়ে গেছে। প্রভাব পড়ছে অবকাঠামো, স্বাস্থ্য, পর্যটন এমনকি মানুষের দৈনন্দিন জীবনে।